বঙাইগাঁও (অসম), ৩১ আগস্ট (হি.স.) : মরিগাঁও জেলার অন্তর্গত মৈরাবাড়ি এবং বরপটায় বাংলাদেশি-জিহাদি টাকায় পরিচালিত দুই মাদ্রাসার পর আজ হিমন্তবিশ্বের বুলডজার চলছে বঙাইগাঁও জেলার যোগীঘোপায় আল-কায়দা পরিচালিত কাবাইতারি মারকাজ-উল মা আরিফ-উ-কারিয়ানা মাদ্রাসায়। এই মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতারের পর উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় মানুষজনের সহায়তায় গতরাত থেকেই উচ্ছেদ অভিযানের প্রস্তুতি চালানো হচ্ছিল। আনসার-উল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) ও আল-কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট (একিউআইএস)-এর সঙ্গে জড়িত অভিযোগে গোয়ালপাড়া পুলিশ মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতারের পর বঙাইগাঁও জলা প্রশাসন উচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছিল।
সে অনুযয়ী মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মাদ্রাসায় এসে মাদ্রাসার ছাত্রাবাস খালি করে দেয়। মাদ্রাসার ছাত্ররা ইতিমধ্যে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেলেও দূর-দূরান্ত থেকে আগত ১৩ জন ছাত্র মাদ্রাসায় এক জায়গায় রাত কাটায়। উচ্ছেদ অভিযানের জন্য আটটি এসকেভ্যাটরকে কাজে লাগানো হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট বুলডজার চালিয়ে মধ্য অসমের মরিগাঁও জেলার অন্তর্গত মৈরাবাড়িতে বাংলাদেশি-জিহাদি টাকায় পরিচালিত সাহারিয়া গ্রামের জমিউত-উল-হুদা মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য পুলিশ। এই মাদ্ৰাসা পরিচালিত হত জিহাদি আল কায়দার ভ্রাতৃ সংগঠন আনসার-উল্লা বাংলা টিম (এবিটি)-এর অৰ্থানুকূল্যে। এর প্রধানশিক্ষক তথা জিহাদি-লিংকম্যান অভিযোগে গত ২৮ জুলাই মুফতি মুস্তাফা আহমেদ সহ আট শিক্ষককে গ্ৰেফতার করেছিল পুলিশ। জমিউত-উল-হুদা মাদ্রাসা থেকে বাংলাদেশ-যোগ, টাকার লেনদেন এবং জিহাদ-সম্পর্কিত বহু পুস্তিকা, নথিপত্রও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছিল। জিহাদি কাৰ্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে মুফতি মুস্তাফার স্ত্রী ও এক ভাইকে আটক করা হয়েছিল।
এছাড়া অসম প্রশাসন গত ২৮ আগস্ট বরপেটার হাউলিতে গড়ে ওঠা একটি মাদ্রাসা ভেঙে দিয়েছে। ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষককে বাংলাদেশ-জিহাদি সংগঠনের সাথে জড়িত থাকার স্পষ্ট তথ্য পেয়েছে জেলা পুলিশ। অভিযোগ, ২০১৯ সাল থেকে মহম্মদ সুমন নামের এক ব্যক্তি জিহাদি আল কায়দার ভ্রাতৃ সংগঠন আনসার-উল্লা বাংলা টিম-এর সক্রিয় সদস্য। তিনি মাদ্রাসার একজন শিক্ষক হিসেবে জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। মহম্মদ সুমনের তত্ত্বাবধানে এই মাদ্রাসা হয়ে ওঠে জিহাদি কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু।
গোয়ালপাড়ার পুলিশ সুপার রাকেশ রেড্ডি জানান, বিভিন্ন জেলার পুলিশ বিভিন্ন মাদ্রাসা থকে বেশ কয়েকটি ছবি বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে এখনই এগুলো শেয়ার করা যবে না। আল কায়দার লোগোও উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় লেখা পুস্তিকা, যেগুলি এবিটি (আনসার-উল্লাহ বাংলা টিম)-এর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। মহম্মদ সুমনের মাদ্রাসা থেকে বহু অপরাধমূলক নথি পাওয়া গেছে। উপরন্তু সেখানে একটি চায়ের দোকান সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই চায়ের দোকান অভিযুক্তরা চালাতো। চায়ের দোকানটি মাদ্রাসা চত্বরেই অবস্থিত। বলেন পুলিস সুপার রেড্ডি।

