বিশালগড়, ২৬ আগস্ট : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে স্বসহায়ক দলের সাথে যুক্ত মহিলাদের বাৎসরিক আয় ১ লক্ষ টাকা করার লক্ষ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে। এরফলে মহিলা স্বশক্তিকরণের পাশাপাশি স্বনির্ভর ভারত গঠিত হবে। আজ সাংসদ আদর্শ গ্রাম পূর্ব গকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতীরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। পূর্ব গকুলনগর উচ্চবুনিয়াদি বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আজ মেগা স্বাস্থ্য শিবির, রক্তদান শিবির, দিব্যাঙ্গজনদের শংসাপত্র বিতরণ শিবির অনুষ্ঠিত হয় এবং স্বসহায়ক দল ও বিভিন্ন দপ্তরের প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতীরাজ মন্ত্রী শ্রীগিরিরাজ সিং আরও বলেন, রাজ্যের পূর্বতন সরকার একটানা ২৫ বছর মানুষের জীবনধারার মৌলিক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়নি। বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে সেই পরিবর্তনের দিশায় এবং লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এই সরকারের আমলে রাজ্যে স্বসহায়ক দলের সংখ্যা বেড়ে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পে প্রায় ৩ লক্ষ ঘর দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নীতি ও নির্দেশনায় দেশ আজ প্রগতির দিকে এগিয়ে চলছে। করোনাকালীন সময়েও ভারতের অর্থনীতি সচল ছিল। ভারতবর্ষই একমাত্র দেশ যেখানে ২০০ কোটি টিকাকরণ করা হয়েছে। তাছাড়াও প্রতিবেশি দেশগুলিকে ভ্যাকসিন দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে দেশের প্রায় ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন সরাসরি সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে তাদের প্রকল্পের টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ডাবল ইঞ্জিনের সরকার আগামী ১০ বছরের মধ্যে ত্রিপুরা তথা এই দেশের প্রত্যেকটি পরিবারের সামগ্রিক উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বলেন, ১১ আগস্ট, ১৯৯৯ সালে এই গ্রাম স্থাপন করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এই গ্রামকে সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই তিন বছরে গ্রামের রাস্তাঘাট, আধুনিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, বিদ্যালয়ের ডাইনিং হল, দুগ্ধ উৎপাদনে ডেয়ারি ক্লাস্টার নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পে ঘর, জল জীবন মিশনে পানীয়জল, সৌভাগ্য যোজনায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। গ্রামে প্রায় ১০০টি সোলার লাইট দেওয়া হয়েছে। তিনি গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সব সম্পদ গ্রামবাসীদেরই রক্ষা করতে হবে। তবেই এই গ্রাম আগামীদিনে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রামে পরিণত হবে। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী গ্রামের প্রত্যেকটি পরিবারকে একটি করে আগর গাছ দেওয়ার ঘোষণা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই আগর গাছ আগামীদিনে এই পরিবারগুলির আর্থিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক বিশ্বশ্রী বি৷ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিধায়ক সুভাষ চন্দ্র দাস, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান এল এইচ দার্লং প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশালগড় পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান ছন্দা দেববর্মা। এদিন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গিরিরাজ সিং সহ অন্যান্য অতিথিগণ গ্রামের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পের একটি ঘর, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ড্রাগন ফ্রুট বাগান প্রভৃতি পরিদর্শন করেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে আয়োজিত বিভিন্ন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে এদিন অতিথিগণ অনুষ্ঠান মঞ্চে পুরস্কার তুলে দেন।