গুয়াহাটি, ২৪ জুলাই (হি.স.) : চলতি বছরের ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত উত্তরপূর্ব সীমান্ত (এনএফ) রেলওয়ের বিভিন্ন ট্রেন ও স্টেশনে আরপিএফ-এর হাতে উদ্ধার হয়েছে শিশু-অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলা সহ ২১ জন। এছাড়াও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের আরপিএফ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু ও মহিলা সহ মোট ১৮৯ ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে। তাদের মধ্যে ৪ জনকে পাচার হওয়ার সময় উদ্ধার করা হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আরপিএফ আটক করেছে। এদের প্রত্যেককে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ট্রেন, রেলওয়ে চত্বর ও স্টেশন থেকে বিভিন্ন অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয়েছে, জানিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে।
এক প্রেস বিবৃতিতে সব্যসাচী দে জানান, ১৮ জুন নিউ আলিপুরদুয়ারের আরপিএফ পোস্টের সাব-ইন্সপেক্টর সহ মেরি সহেলি টিম নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে তল্লাশি চালানোর সময় ওয়েটিং হল-এ বাচ্চা সহ একজন মহিলা ও একজন পুরুষকে সন্দেহজনকভাবে দেখে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মহিলাটি জানায়, সে পুরুষ ব্যক্তিটির সঙ্গে পালিয়ে এসেছে। পুরুষটি তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পরে মহিলাটি বুঝতে পারে যে সে সম্ভবত মানব পাচারকারীর কবলে পড়েছে। এটি মানব পাচারের ঘটনা হিসেবে সন্দেহ করার পর ধৃত পুরুষটির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহিলা ও শিশুটিকে নিউ আলিপুরদুয়ারের গর্ভমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)-এর অফিসার ইনচার্জের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর পর তিনি তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বক্সিরহাটের স্থানীয় থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে সমঝে দেন।
এভাবে ১৯ জুলাই আরও একটি ঘটনায় ডিমাপুরের আরপিএফ পোস্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর ও কর্মীরা ডিমাপুর রেলওয়ে স্টেশনে তল্লাশি চালানোর সময় দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেকে উদ্ধার করেন। পরে তাদের ডিমাপুরের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
২২ জুলাই কামাখ্যার আরপিএফ পোস্টের সাব-ইন্সপেক্টর ও কর্মীরা জিআরপি ও জালুকবাড়ি থানার স্থানীয় পুলিশের সাথে কামাখ্যা রেলওয়ে স্টেশনে মানব পাচার বিরোধী ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যৌথ তল্লাশি অভিযান চালায়। ওই তল্লাশি অভিযানের সময় তারা চারজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে উদ্ধার করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মেয়েগুলি নাকি জানায় যে তারা বাংলাদেশ থেকে আগরতলা হয়ে বাসে করে গুয়াহাটি এসেছে। পরে উদ্ধারকৃত অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েগুলিকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।
মানব পাচারকারকার্যে জড়িত সন্দেহজনক ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার পাশাপাশি স্টেশনগুলিতে সন্দেহজনক অবস্থায় শিশুদের চলাফেরা করা, অভিভাবক ছাড়া শিশুদের একা একা ভ্রমণ করা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক নজরদারি করার জন্য আরপিএফ-এর ট্রেন এসকর্ট পার্টি ও কর্মীদের বিভিন্ন স্টেশনে নিয়োজিত করা হয়েছে। নিয়মিত তল্লাশি অভিযান চালানো, এনজিওগুলির সাথে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়তা রক্ষা করা, জনগণকে সংবেদনশীল করে তোলা ইত্যাদির প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানান উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে।