করিমগঞ্জ (অসম), ২৫ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : করিমগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মহিশাসনে আন্তর্জাতিক রেলওয়ে টার্মিনাস হবে। রেলওয়ে দফতরের এই ঘোষণার মাসখানেকের মধ্যেই উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জিএম আনসুল গুপ্তা (আইআরএস) সদল বলে করিমগঞ্জ এসে সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করে গেলেন। বিদেশ মন্ত্রক, রেলওয়ে মন্ত্রক সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলি করিমগঞ্জেই স্থাপন হবে বলে জানান রেলওয়ের নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ারের জিএম আনসুল গুপ্ত।
আন্তর্জাতিক রেলওয়ে টার্মিনাসের কাজ খুব দ্রুতগতিতে চলছে বলেও জানান উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জিএম। স্থানীয় যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো নিয়মিতভাবে চালু করা, করিমগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনকে পুনরুজ্জীবিত করা, দূরপাল্লার ট্রেন করিমগঞ্জ স্টেশন দিয়ে চলাচল করা সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে জিএম আনসুল গুপ্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিদের মতো মনীষীগণ এই স্টেশনে এসেছিলেন। তাই ঐতিহ্যবাহী তথা বরাক উপত্যকার সব থেকে প্রাচীন এই রেলওয়ে স্টেশনকে পুনরায় সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি আধুনিকীকরণের দাবিও জিএমের কাছে তুলে ধরেছেন জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য। করিমগঞ্জ-শিলচর, শিলচর-করিমগঞ্জ, শিলচর-দুল্লভছড়া ভায়া করিমগঞ্জ স্টেশন, করিমগঞ্জ-মহিশাসন রুটে স্থানীয় ট্রেন নিয়মিতভাবে চালু করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে টাইম শিডিউল তৈরি করে এই সকল রুটে স্থানীয় ট্রেন অতিসত্বর চালু করার জন্য এরিয়া ম্যানেজার দীপক মুর্মুকে নির্দেশ দেন জিএম আনসুল গুপ্তা।
জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য কর্তৃক উত্থাপিত একটি দূরপাল্লার ট্রেন করিমগঞ্জ স্টেশন হয়ে চলাচল করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জিএম আনসুল গুপ্তা আশ্বাস দিয়ে বলেন, খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শুক্রবার সকাল আনুমানিক সাড়ে এগারোটা নাগাদ একটি বিশেষ ট্রেনে ডিআরএম জেএস লাকরা (আইআরএস), এরিয়া ম্যানেজার দীপক মুর্মু সহ বিভাগীয় শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে করিমগঞ্জ পৌঁছেন জিএম। প্রথমেই তিনি সোজা চলে যান মহিশাসনে। সেখানে নির্মীয়মাণ পরিকাঠামোগত কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন জিএম আনসুল গুপ্তা। রেলওয়ে দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজের তদারকি করে, বেলা দেড়টা নাগাদ পুনরায় করিমগঞ্জ স্টেশনে আসেন জিএম। জেলা বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বিশেষ ট্রেনের ভিতরেই জিএমের সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তাঁর কাছে। সুব্রতের উত্থাপিত প্রতিটি দাবিই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন জিএম আনসুল গুপ্তা।
জিএমের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জেলা বিজেপি সভাপতির সঙ্গে ছিলেন শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দেবব্রত সাহা ও জেলা বিজেপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক নিশিকান্ত ভট্টাচার্য।
এদিকে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জিএম আনসুল গুপ্তার করিমগঞ্জ সফরের খবর পেয়ে জেলা কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দলও তাঁর সঙ্গে দেখা করে। প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি তথা বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদ এবং শহর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তাপস পুরকায়স্থ জিএম আনসুল গুপ্তার সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন দাবি জানান। জেলার প্রতিটি স্টেশনের দুরবস্থার কথাও জিএমের কাছে তুলে ধরেন তাঁরা। আগরতলা-শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, আগরতলা-আনন্দবিহার ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস করিমগঞ্জ স্টেশন হয়ে চলাচল করার দাবিও জিএমের কাছে তুলে ধরেন কমলাক্ষ ও সিদ্দেক। সেই সঙ্গে করিমগঞ্জ স্টেশনকে আধুনিক রূপে সাজিয়ে তোলারও দাবি জানান কংগ্রেস নেতারা। জেলা কংগ্রেসের প্রতিটি দাবি যথাসম্ভব সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন জিএম আনসুল গুপ্তা।