BRAKING NEWS

Sudip Roy Barman : এরাজ্য থেকে হিরা তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ সুদীপ বর্মণের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ ফেব্রুয়ারী৷৷ কংগ্রেস দলে যোগ দিয়ে বিজেপি ত্যাগী সুদীপ রায় বর্মণ প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপ দাগালেন৷ দুর্নীতি, লুটপাট থেকে শুরু করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দিয়েছেন সুদীপ বর্মণ৷ শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যেও তিনি বার্তা দিয়েছেন এরাজ্য থেকে হিরা তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য৷ যে হিরা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ত্রিপুরাবাসীকে সেটা নাকি হিরা নয় কাঁচের টুকরো৷


রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিরি নেতৃত্ব অজয় কুমারের উপস্থিতিতে সুদীপ রায় বর্মন সহ পিসিসি সভাপতি বীরজিৎ সিনহা এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতৃত্ব বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সম্মেলনে৷


সুদীপ রায় বর্মন সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,  আমি মোদিজির কাছে একটি আবেদন করতে চাই৷ মোদিজি ২০১৮ নির্বাচনের পূর্বে  ত্রিপুরাবাসীকে ভরসা দিয়েছিলেন যে,  ত্রিপুরাবাসীকে হিরা দিয়ে যাবেন৷ হিরা দিয়ে আপনি ত্রিপুরার জনগণকে ধোকা দিয়েছেন৷ এটা হিরা নয় এটা কাঁচের টুকরো৷ ত্রিপুরার মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছেন৷ এখানে লুটপাট চলছে৷ দুর্নীতি চলছে৷ সুদীপ বাবু বলেন, মোদির কাছে হাতজোরে আবেদন করছি, আপনার দৃষ্টিতে যে হিরা সেটাকে এখান থেকে তুলে নিয়ে যান৷ ত্রিপুরাবাসীকে এই হিরা থেকে মুক্তি দিন৷ এটা হিরা নয় কাঁচের টুকরো৷ এটা প্রতিটি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, আঘাত দিচ্ছে৷ লুটপাটের মাত্রা এমন যায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরকেও ছাড়া হচ্ছে না৷ তাই নকলি হিরাকে দ্রুত এখান থেকে নিয়ে যান৷ অন্য কোথাও শুভা পেলে সেখানে রেখে দিন৷


সুদীপবাবু আরও বলেন, কংগ্রেস আজ উন্নততর কংগ্রেসে রূপ নিয়েছে৷ মানুষের জন্য কিছু করার মানসিকতা তৈরী হয়েছে৷ মানুষ ভুল থেকে শিক্ষা নেয়৷ আমরা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি কংগ্রেসের জন্য হয়ে রাজ্যবাসীর জন্য কাজ করবে৷ এটাই এমন দল যে জনগণকে প্রধান্য দেয়৷ দেশের যে সম্পদ তা কংগ্রেসের তৈরী করা৷ বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার ক্ষমতায় এসে এই রাজ্যে একটা নতুন প্রকল্প করেছে দেখাতে পারবে না৷ নেই নতুন কলেজ, হাসপাতাল, সুকল৷ পুরনো কাজ সম্পন্ন করে রং লাগানো হচ্ছে৷ মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে৷


বিজেপি জোট সরকার সংখ্যালঘু হয়ে যাবে কি না এনিয়ে রাজ্যে বর্তমানে একটি রাজনৈতিক হিসেব নিকেশ চলছে৷ এই বিষয়ে সুদীপ বর্মণ বলেন,  দলত্যাগ এবং বিধায়ক পদে ইস্তফা পত্র দাখিল করে বিধানসভার বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলেছিলাম সরকার সংখ্যালঘু হয়ে যাবে৷ কেউ যদি আমাদের দলে যোগদান করে তাহলে তাঁদের স্বাগত৷ একটি মহল থেকে আতঙ্কিত হয়ে মানুষের কাছে ভুল বার্তা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷


সর্বশিক্ষা শিক্ষকদের প্রসঙ্গে সুদীপ বর্মণ বলেন, অদ্ভুত একটি সরকার৷ হাইকোর্টের অর্ডারকেও মান্যতা দেয় না৷ আদালতের রায় সর্বশিক্ষা অভিযানে শিক্ষকদের পক্ষে গেছে রায়৷ তাদেরকে নিয়মিত করলেই হয়ে যায়৷ শিক্ষামন্ত্রী রতন নাথের কটাক্ষ করে সুদীপ বর্মণ বলেন, যেই শিক্ষামন্ত্রী এনজিওর হাতে তুলে দিয়েছেন সুকলগুলিকে সেই শিক্ষামন্ত্রী বলছেন সাংঘাতিক উন্নয়ন করে ফেলেছে৷ ব্যক্তিগত কি কি উন্নয়ন হয়েছে তা আমরা জানি৷ মানুষের স্বার্থ বিরোধী যে দল সেই দলা করা থেকে মরা ভাল৷ এসএসএ নিয়ে হাইকোর্টের রায় মেনে শিক্ষকদের নিয়মিতকরণ করার দাবী জানান সুদীপ বর্মন৷


মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নাম উল্লেখ না করে সুদীপবাবু বলেন, মানুষের ব্যথাটা কোন জায়গায় সেটা অনুভব করা উচিৎ৷ হকারদের কথা না ভেবে ব্যবসায়ীদের দোকানে ড্রজার চালানো হয়েছে৷ এ কি ধরনের রাজা যেই রাজা তাঁর রাজত্বে যারা বসবাস করছে তাদের সুখ দুঃখের কথা ভাববেন না৷ এ কোন রাজা, মানুষ যখন মারা যায় তখন আমরা দেখি রাজাকে বাঁধা কপি ক্ষেতে, শশা ক্ষেতে, তরমুজ ক্ষেতে৷ এর জন্য মানুষ ভোট দিয়েছিল প্রশ্ণ তুলেন সুদীপবাবু৷


সুদীপ বর্মণ আরও বলেন, প্রায়শই শোনা যায় রাজ্যের মানুষের গড় আয়বেড়ে গেছে৷ যখন কাজ নেই, খাদ্য নেই তখন বলছে মানুষের গড় আয় বেড়ে গেছে৷ মূলত দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারীদের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে৷ তাদের হিসাবের ভিত্তিতে মানুষের গড় আয় বৃদ্ধির উল্লেখ করা হচ্ছে৷ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে৷ যেখানে রাজ্যের সিংহভাগ মানুষ এখনও দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করছেন৷ সুদীপ বর্মণ হুঙ্কার দিয়েছেন আগামীদিনে ধীরে ধীরে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়ম এবং দুর্নীতি জনসমক্ষে তুলে ধরবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *