এমবিবি বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনে যাত্রী পরিসেবা চালু, শীঘ্রই শুরু হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ব্যাঙ্কক আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল

আগরতলা, ১৫ জানুয়ারি (হি. স.) : দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হল আজ। এমবিবি বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল দিয়ে যাত্রী পরিসেবা শুরু হয়েছে। আজ সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্র মন্ত্রী কলকাতা থেকে আসা যাত্রীদের অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। তিনি নিজেও আজ নতুন টার্মিনাল দিয়ে প্রথম যাত্রীদের সাথে ভায়া কলকাতা দিল্লি যাচ্ছেন। এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ইতিপূর্বে আমরা রেগার কাজ ও সামাজিক ভাতায় আবদ্ধ ছিলাম। আজ আমরা আন্তর্জাতিক উড়ান শুরু হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। সাথে তিনি যোগ করেন, খুব শীঘ্রই আগরতলা ভায়া গুয়াহাটি থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্যাঙ্ককের বিমান শুরু হচ্ছে। এদিকে, আজ কলকাতার দুই নাগরিক এমবিবি বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনালে পা রেখে ভীষণ আশ্চর্য্য হয়েছেন। ত্রিপুরায় এত উন্নতমানের বিমান বন্দরের টার্মিনাল ভবন নির্মাণ সম্ভব, ভাবতেই তাঁরা অবাক হচ্ছেন।


প্রসঙ্গত, গত ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমবিবি বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন। আজ থেকে ওই ভবনের বাণিজ্যিক পরিসেবা শুরু হয়েছে। এদিন সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক নতুন টার্মিনাল ভবনে আসা প্রথম বিমান যাত্রীদের চকলেট বিতরন করেছেন। যাত্রীরাও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেন। অনেকেই তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলতে এগিয়ে যান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যাত্রীদের কাছ থেকে নতুন টার্মিনাল ভবন সম্পর্কে অনুভূতি জেনে নেন। প্রত্যেক যাত্রী ওই নতুন টার্মিনাল ভবনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। কারণ, ত্রিপুরার মতো ছোট্ট পার্বতী রাজ্যে এত উন্নতমানের টার্মিনাল ভবন নির্মাণ আদৌ সম্ভব হবে, তা সকলের কল্পনাতীত ছিল।


নতুন টার্মিনাল ভবনে বর্ধিত চেক-ইন কাউন্টার, অত্যাধুনিক লাইন ব্যাগেজ স্ক্রীনিং সিস্টেম, ফুড কোর্ট, চাহিদানুসার খাবার সহ বিশ্বমানের গুচ্ছ আউটলেট যাত্রীসাধারণ ও ভ্রমণকারীদের স্বচ্ছন্দকে সুনিশ্চিতি করবে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য নির্বিঘ্ন চলাচল সহায়ক চারটি অ্যারো ব্রিজের পাশাপাশি রয়েছে ছয়টি পার্কিং-বে।


এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার আজ অবসান হয়েছে। এমবিবি বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনাল দিয়ে যাত্রী পরিসেবা শুরু করেছে। এই অনুভূতি আজ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আজকের দিনটির সাক্ষী থাকার জন্য তিনি সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। সাথে তিনি বলেন, আজকেই আগরতলা থেকে নতুন টার্মিনাল দিয়ে প্রথম বিমানের যাত্রী হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
এদিন তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, অতীতে রেগার এবং সামাজিক ভাতায় আবদ্ধ ছিলাম আমরা। এখন আন্তর্জাতিক উড়ান শুরু হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। তাঁর কথায়, এই নতুন টার্মিনাল দিয়ে একসাথে ১২০০ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। তেমনি, ৫০০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা রয়েছে এই টার্মিনালের। সাথে তিনি যোগ করেন, টার্মিনাল ভবনটির পরিসর আরও বৃদ্ধি করার জন্য অর্থের যোগান হচ্ছে।


তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই আগরতলা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান শুরু হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগরতলা ভায়া গুয়াহাটি থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ব্যাঙ্ককে বিমান পরিসেবা খুব শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরায় হীরা দেবেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্ত, ইতিমধ্যেই হীরা প্লাস দিয়ে ফেলেছেন। তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা আগেই করে ফেলেছিলেন, যা সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছে। কারণ, তিনি কথা কম বলে কাজ বেশি করার পরামর্শ দেন।


এদিকে, আজ এমবিবি বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনালে নেমে কলকাতার দুই বাসিন্দা ভীষণ আশ্চর্য্য হয়েছেন। কারণ, ত্রিপুরায় এত উন্নতমানের টার্মিনাল নির্মাণ সম্ভব, তা তাঁরা ভাবতেই অবাক হচ্ছেন। জনৈক যাত্রী বলেন, ত্রিপুরায় এমবিবি বিমান বন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনটি ভীষণ সুন্দর হয়েছে। অনেক বড় শহরের টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ শৈলীর নৈপুন্যকে টেক্কা দেওয়ার সামর্থ রয়েছে। বেঙ্গালুরু থেকে আসা জনৈক মহিলা যাত্রী নতুন টার্মিনাল ভবনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার মেলবন্ধনে নির্মিত এই টার্মিনাল ভবনটি যাত্রীদের সমস্ত ধরনের পরিসেবা নিশ্চিত করেছে।