অনলাইন মিটিং চলাকালীন বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ

বোলপুর, ১২ জানুয়ারি (হি. স.) : অনলাইন মিটিং চলাকালীন বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো বিশ্বভারতীতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই অডিও ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছে বিশ্বভারতী। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীয় পড়ুয়া, অধ্যাপক, আধিকারিকদের নিয়ে অনলাইনে মিউজিক থেরাপির ক্লাস চলছিল। অংশ নিয়েছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। সংগীত ভবনের তত্ত্বাবধানে অনলাইনে মিউজিক থেরাপির অনুষ্ঠান চলাকালীন আচমকাই ঘটে বিপত্তি। অজানা অ্যাকাউন্ট থেকে, কয়েকজন লিঙ্কে ঢুকে পড়েন অনলাইন ক্লাসে।তাদের মধ্যে একজনকে তাঁর পরিচয় জিজ্ঞেস করলে উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক । এর ফলে একটি অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয় গোটা অনুষ্ঠান জুড়ে।উপাচার্য সহ অন্যান্য অধ্যাপকরা চিৎকার করে ওই যুবককে বের করে দেওয়ার জন্য অনলাইন মিটিংয়েরর হোস্ কে বলতে শোনা যায়। পরে অবশ্য বৈঠক থেকে বের করে দেওয়া হয় ওই যুবকদের । যদিও এই ঘটনার জেরে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন উপস্থিত সকলে।ওই ঘটনার অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে।

এমনিতেই বিভিন্ন সময়ে বিশ্বভারতীর আভ্যন্তরীণ বৈঠকে নানা মন্তব্য করে গত কয়েক বছর ধরেই বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁকে নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে আশ্রমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মী এবং পড়ুয়াদের একাংশের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈঠক চলাকালীন এ ভাবে নোংরা ভাষায় গালিগালাজের ঘটনা আগে ঘটেনি।উপাচার্যের উপর রাগ মেটাতেই কি এই কান্ড ঘটনো হল? এই প্রশ্ন ঘুরছে বিশ্বভারতীর অন্দরে।

যদিও বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিউফা এই অনভিপ্রেত গালাগালির নিন্দা করছে, কিন্তু একই সঙ্গে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “বিশ্বভারতীর অফিসিয়াল মিটিং এ গালাগালি দেওয়ার সংস্কৃতির আমদানী করেছেন উপাচার্য, যা নিয়ে অধ্যাপকরা থানায় অভিযোগ ও করেছেন। আমরা মনে করি এলাকাবাসীর জীবন যেভাবে পাঁচিল, গেট, মেলা-দোল বন্ধ করে ভাতে মারার চক্রান্তে অতিষ্ট করা হয়েছে, সেই জনরোষ উপাচার্যের দেখানো পথেই প্রতিফলিত হয়েছে। আরো বড় বিপর্যয়ের আগেই আমরা বিষয়টি উপাচার্যের নিয়োগকর্তাদের গোচরে আনতে চাইছি।”

তবে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিশ্বভারতীর মত একটি প্রতিষ্ঠানে, কিভাবে এমন ঘটনা ঘটতে পারে?একজন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে, বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল মিটিংয়ের লিঙ্ক পৌছাল কি ভাবে? বিষয়টি নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সেটাই এখন দেখার। বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক জানান, “এই ঘটনা শুধু যে অপ্রত্যাশিত তাই নয়, অনভিপ্রেতও। আগেও কখনোই এমন ঘটনা ঘটে নি।” যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও এ বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে ।