নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/ খোয়াই, ২৭ ডিসেম্বর৷৷ সোমবার ২৭ শে ডিসেম্বর জনশিক্ষা দিবস৷ জনশিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজ্যে শিক্ষার আলো প্রসারিত হয়েছিল৷ দিনটি এরাজ্যের ইতিহাসে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ৷ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দশরথ দেববর্মা এবং সুধন্য দেববর্মারা এই জনশিক্ষা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন৷ জনশিক্ষা আন্দোলন দিবস এবছর ৭৬বছরে পদার্পণ করেছে৷ ৭৬ তম জনশিক্ষা দিবস রাজধানী আগরতলা শহর সহ রাজের সর্বত্রই সিপিআইএম দলের পক্ষ থেকে পালন করা হয়৷ এ উপলক্ষে মৌল অনুষ্ঠানটি হয় মেলার মাঠে সিপিআইএম এর প্রধান কার্যালয়ে৷ সোমবার সকালে সিপিআইএম সদর কার্যালয় এর সামনে দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জন শিক্ষা আন্দোলনের প্রয়াত নেতাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়৷
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী প্রবীণ সিপিআইএম নেতা জমাতিয়া সহ অন্যান্য বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ৷ জান শিক্ষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন ত্রিপুরায় ১৮৪ জন রাজা রাজত্ব করেছেন৷ তারা প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করেছেন৷ সেই খাজনা টাকা দিয়ে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ তৈরি করাসহ রাজাদের কল্যাণে নানা কাজ করা হয়েছে৷ কিন্তু প্রজাদের কল্যাণে তেমন কিছুই করা হয়নি৷ আজ থেকে ৭৬ বছর আগে ত্রিপুরা যখন রাজন্য শাসিত রাজ্য ছিল তখন তৎকালীন যুবকদের মধ্যে দশরথ দেব, সুধন্য দেববর্মা সহ ১১ জন উপজাতি যুবক জনজাতি দর শিক্ষার লক্ষ্যে জনশিক্ষা সমিতি গড়ে তুলেছিলেন৷ তারা গ্রাম পাহাড়ে উপজাতিদের শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন জায়গায় সুকল গড়ে তুলেছিলেন৷ তৎকালীন জনশিক্ষা কমিটির মোট ৪০০সুকল গড়ে তুলেছিল৷ উপজাতিদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার মধ্য দিয়ে শোষণ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে উন্মেষ ঘটানোই ছিল তাদের সেই জন শিক্ষা সমিতির জনশিক্ষা আন্দোলনের মূল লক্ষ্য৷ বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে জনশিক্ষা আন্দোলন এর পরোধাদের স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে এবং আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে৷ শুধু আগরতলাতেই নয়,অমরপুর,উদয়পুর, সাবরুম,বিলোনিয়া, কমলপুর,কৈলাশহর, কুমারঘাট,ধর্মনগর সহ রাজ্যের সর্বত্রই আজ জনশিক্ষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে৷
খোয়াইয়ে ৭৭তম ঐতিহাসিক জনশিক্ষা দিবস উদযাপিত হয়েছে৷ সোমবার সকালে মহকুমার বিভিন্ন অনলে পতাকা উত্তোলন ও জনশিক্ষা আন্দোলনের জননেতা দশরথ দেব সহ অন্যান্য প্রয়াত নেতৃবৃন্দের প্রতিকৃতিতে ফুল মালায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়৷ দিবসটি উদযাপন কর্মসূচীর অংগ হিসেবে এদিন সকালে সি পি আই এমর জেলা কার্য্যালয়ে গণমুক্তি পরিষদের পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি রনিৎ দেববর্মা৷
নেতৃবৃন্দের প্রতিকৃতিতে ফুল মালায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রনিৎ দেববর্মা, জি এম পি -র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক পদ্ম কুমার দেববর্মা, গণ আন্দোলনের নেতা নির্মল বিশ্বাস, আলয় রায় সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ৷ এখানে বক্তব্য রাখেন রনিৎ দেববর্মা৷বলেন জাতি উপজাতি মৈত্রী অক্ষুন্ন রেখে শিক্ষা, সংসৃকতি ও ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই সংগ্রামের আহ্বান জানান৷এছাড়া এদিন, রামচন্দ্রঘাটের আমপুরায় জনশিক্ষা আন্দোলনের দশরথ দেবের পূর্ণাবয়ব মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান জি এম পি – র সহ সভাপতি রনিৎ দেববর্মা, সহ সম্পাদক পদ্ম কুমার দেববর্মা সহ বিশ্বরনন দেববর্মা, সমরেশ দেববর্মা প্রমুখ৷

