লাল টুপিওয়ালারা লালবাতি নিয়েই চিন্তিত ছিল, মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে নয় : প্রধানমন্ত্রী

গোরক্ষপুর, ৭ ডিসেম্বর (হি.স.): গোটা উত্তর প্রদেশের জনগণ ভালো করেই জানেন, লাল টুপিওয়ালারা লালবাতি নিয়েই বেশি চিন্তিত ছিল, মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে মোটেও নয়। মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরে উত্তর প্রদেশের পূর্বতন সরকারকে আক্রমণ করে এই খোঁচা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “কেলেঙ্কারির জন্য ক্ষমতার প্রয়োজন লালটুপিওয়ালাদের, নিজেদের আলমারি ভরার জন্য, অবৈধ দখলদারিত্বের জন্য ও মাফিয়াদের ছাড় দিতেই তাঁদের ক্ষমতার লোভ।” মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরে ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে এইমস গোরক্ষপুর, গোরক্ষপুর ফার্টিলাইজার প্ল্যান্ট প্রভৃতি।

এইমস গোরক্ষপুর উত্তর প্রদেশ তথা দেশের জনগণকে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “সবাই ভালো করেই জানেন গোরক্ষপুরে এইমসের দাবি বছরের পর বছর ধরে উঠেছিল। কিন্তু, ২০১৭ সালের আগে যারা সরকার চালাচ্ছিল তাঁরা এইমস-এর জন্য জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্ত ধরনের অজুহাত তৈরি করেছিল। এখানে কর্মসংস্থানের জন্য গোরক্ষপুরের সার কারখানাটি এই সমগ্র অঞ্চলের কৃষকদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সকলেই জানেন। কিন্তু আগের সরকারগুলি তা চালু করতে কোনও আগ্রহ দেখায়নি।” প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “স্বাধীনতার পর থেকে এই শতাব্দীর সূচনা পর্যন্ত দেশে মাত্র একটি এইমস ছিল। অটলজি আরও ৬টি এইমস অনুমোদন করেছিলেন। গত ৭ বছরে ১৬টি নতুন এইমস তৈরির কাজ চলছে সমগ্র দেশে। দেশের প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি মেডিকেল কলেজ থাকুক, এটাই আমাদের লক্ষ্য।”

উত্তর প্রদেশের পূর্বতন সরকারকে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “পূর্বতন সরকারগুলি অপরাধীদের আশ্রয় দিয়ে উত্তর প্রদেশের নাম বদনাম করেছে। বর্তমানে মাফিয়ারা কারাগারে এবং বিনিয়োগকারীরা উত্তর প্রদেশে দু’হাত তুলে বিনিয়োগ করছেন। এটাই ডাবল ইঞ্জিনের ডাবল উন্নয়ন। তাই ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের প্রতি উত্তর প্রদেশের আস্থা রয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী এদিনের অনুষ্ঠানে আরও বলেছেন, “৫ বছর আগে গোরক্ষপুরে এইমস ও ফার্টিলাইজার কারখানার শিলান্যাস করতে এসেছিলাম আমি। আজ এই দু’টিই একসঙ্গে চালু করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। আইসিএমআর-এর আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র নিজস্ব ভবন পেয়েছে। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক অভিনন্দন। গোরক্ষপুরে ফার্টিলাইজার কারখানা ও এইমস-এর সূচনা অনেক বার্তা দিচ্ছে। যখন ডাবল ইঞ্জিনের সরকার হয়, তখন কাজও দ্বিগুণ গতিতে হয়। ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করলে দুর্যোগও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।”

গোরক্ষপুর থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “যখন গরিব, শোষিত ও নিপীড়িতদের জন্য ভাবনাচিন্তা করার এমন সরকার থাকে, তখন কঠোর পরিশ্রমও করে ও ফলাফলও দেখায়। ২০১৪ সালে আমি যখন সেবা করার সুযোগ পেয়েছিলাম, তখন দেশে ফার্টিলাইজার সেক্টরের অত্যন্ত খারাপ অবস্থা ছিল। দেশের অনেক সার কারখানা বছরের পর বছর বন্ধ হয়ে পড়েছিল। আমরা ইউরিয়ার অপব্যবহার বন্ধ করেছি। আমরা কোটি কোটি কৃষককে মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড দিয়েছি যাতে তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের খেতের জন্য জন্য কী ধরনের সার প্রয়োজন। আমরা ইউরিয়ার উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছি। বন্ধ থাকা সার কারখানা পুনরায় চালু করার জন্য জোর দিয়েছি। দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হওয়া ৫টি সার কারখানা চালু হওয়ার পর দেশে অতিরিক্ত ৬০ লক্ষ টন ইউরিয়া পাওয়া যাবে। অর্থাৎ ভারতকে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাঠাতে হবে না, ভারতের টাকা ভারতেই খরচ হবে।