BRAKING NEWS

রহস্যে মোড়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীর অপহরণ কান্ড, কাল আদালতে জবানবন্দী দেবে নির্যাতিতা

আগরতলা, ২৭ আগস্ট (হি. স.) : তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মহিলা কর্মীর কথিত অপহরণের ঘটনাকে ঘিরে ত্রিপুরায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দুপুরে এমবিবি কলেজ চত্বরে দুই গোষ্ঠির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এবিভিপির কর্মীরা আজ কলেজে ঢুকে হুজ্জুতির অভিযোগ এনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের মারধর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কলেজ চত্বরে বিশাল পুলিশ ও টিএসআর মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষের কাছে কেউই অভিযোগ জানাননি বলে তিনি দাবি করেন। দলীয় কর্মী আক্রান্তের খবর পেয়ে সাংসদ ডা: সান্তনু সেন এবং তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কলকাতা থেকে ছুটে এসেছেন। তাঁরা আজ পূর্ব আগরতলা মহিলা থানায় ধর্না দেন। শেষে ঘটনা নিয়ে পুলিশের সাথে তাঁরা আলোচনায় বসেন। থানা থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ দাবি করেন, আগামীকাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সোলাঙ্কি সেনগুপ্তের ১৬৪ জবানবন্দী নেবেন আদালত। তিনি আদালতের কাছে অপহরণ ও নিগ্রহের ঘটনার বিস্তারিত জানাবেন। তবে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে, সোলাঙ্কি সেনগুপ্তের বক্তব্য অনুযায়ী তাকে কমন রুমে আটকে রাখা হয়েছিল। তারপর তিনি জয়গুরু এলাকায় কিভাবে গিয়েছেন। কারণ, পুলিশ তাঁর খুঁজে যখন ফোন করেছিল তখন তাঁকে জয়গুরু এলাকায় পাওয়া গিয়েছিল।


আজ দুপুরে হটাতই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সোলাঙ্কি সেনগুপ্তের অপহরণ হয়েছে খবর ছড়িয়ে পরে চারিদিকে। ওই খবরের ভিত্তিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্যান্য কর্মী এবং কলকাতা থেকে আসা কিছু যুব তৃণমূল নেতা-নেত্রী এমবিবি কলেজে ছুটে যান। তাঁদের অভিযোগ, সোলাঙ্কিকে কলেজেই আটকে রাখা হয়েছে। এদিকে, কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের দেখে চিন্তায় পরেন এবিভিপির কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী কলেজের ক্যান্টিনে ঢুকে হুজ্জুতি করেছে, প্রফেসরকে ধাক্কা দিয়েছে। ওই অভিযোগকে ঘিরে এবিভিপির কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জনৈক কর্মীকে প্রচন্ড মারধর করেন। পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগেই কলেজে পৌছে গিয়েছিল। তাই পরিস্থিতি কুব একটা নিয়ন্ত্রনের বাইরে যেতে পারেনি।


কলেজ চত্বরে বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এদিকে, এমবিবি কলেজের অধ্যক্ষা দাবি করেন, ছাত্রী অপহরণের কোন অভিযোগ তাঁর কাছে এখনো কেউ করেননি। তবে, কলেজে ঢুকে কিছু ছাত্রছাত্রী হামলা হুজ্জুতি করেছে এমনটা জানতে পেরেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, দলীয় ছাত্র পরিষদের কর্মীদের আক্রান্তের খবর পেয়ে কলকাতা থেকে ছুটে এসেছেন কুণাল ঘোষ ও ডা: শান্তনু সেন। তাঁরা আগরতলায় এসেই পূর্ব আগরতলা মহিলা থানা ঘেরাও করেন। শেষে এসডিপিও সদর উপস্থিত হয়ে তাঁদের আলোচনার জন্য ডাকেন। এদিন থানায় দীর্ঘ সময় তৃণমূল নেতাদের সাথে পুলিশের আলোচনা হয়েছে। ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা করে তৃণমূল নেতারা অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। আলোচনা শেষে থানা থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতিকারীদের গ্রেফতারে পুলিশ ভয় পাচ্ছে। তাই, আদালতে সোলাঙ্কি সেনগুপ্তের ১৬৪ জবানবন্দী নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। পুলিশ তা মঞ্জুর করেছে। আগামীকাল আদালতে সোলাঙ্কি সেনগুপ্ত সমস্ত ঘটনার জবানবন্দী দেবেন।


এরই মাঝে এদিন দুপুরেই সোলাঙ্কি সেনগুপ্তকে খুঁজে পাওয়ার পর তাঁকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনা হয়েছিল। তিনি জানান, আগামীকাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন নিয়ে টেলিফোনে আলোচনা চলছিল। তখনই কলেজের কয়েকজন ছাত্রী তাকে ডেকে নিয়ে যান। এমবিবি এবং বিবিএম কলেজের ওই ছাত্রীরা তাকে কমন রুমে নিয়ে আটকে রাখেন। কিন্ত, তিনি জয়গুরু এলাকায় কিভাবে গেলেন তার কোন উত্তর তিনি দেননি। কারণ, পুলিশ যখন টেলিফোনে তার খোজ নিচ্ছিল তখন তাকে জয়গুরু এলাকায় পাওয়া গিয়েছিল। তাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে কমন রুম থেকে জয়গুরু এলাকায় কিভাবে পৌচেছেন। কিন্ত এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। বরং কলকাতা থেকে আসা তৃণমূল যুব নেতারা তাকে ওই প্রশ্নের উত্তর দিতে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। ফলে, আজকের ওই অপহরণ ঘটনা ভীষণ রহস্যময়ী বলেই মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *