নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ আগস্ট।। ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের হীরাছড়া চা বাগানের জমি জোর করে দখল করে বাগান শ্রমিকদের প্রাননাশের হুমকি দেওয়ায় বাগান শ্রমিকরা বাগান শ্রমিকরা সোমবার দুপুরে কৈলাসহরের মহকুমা শাসকের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ত্রিপুরা রাজ্যের প্রথম চা বাগান হলো হীরাছড়া চা বাগান। শত বছরের বেশী পুরনো এই হীরাছড়া চা বাগান বিগত কয়েক বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে।
বাগানে কয়েক শত শ্রমিক এবং শ্রমিকদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও রয়েছে। বাগান শ্রমিকরা বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে বলেন যে, শত বছর পুরনো এই হীরাছড়া চা বাগানে উনারা বংশপরম্পরায় চায়ের কাজ করে আসছেন এবং পাশাপাশি বাগানের এই পতিত জমিতে শত বছর ধরে ধান চাষও করে আসছেন। কিন্তু গত কিছু দিন পূর্বে বাগানের পতিত জায়গাগুলো বহিরাগত রুবেল আলী এবং মকদ্দুস আলীর নেতৃত্বে জমি মাফিয়ারা দখল করে নিয়ে বাগান শ্রমিকদের চাষবাস না করার জন্য হুমকী দেয়। জমি মাফিয়ারা বাগান শ্রমিকদের বলে যে, যদি তারপরও বাগান শ্রমিকরা জমিতে চাসবাস করে তাহলে প্রানে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকিও দেয় বলে বাগান শ্রমিকরা জানায়।
একদিকে কয়েক বছর ধরে বাগান বন্ধ। তার মধ্যে বাগানের জমি দখল করায় বাগান শ্রমিকরা একেবারেই নিরুপায় হয়ে পড়ে। অসহায় নিরুপায় বাগান শ্রমিকরা জমি মাফিয়া রুবেল আলী, মকুদ্দস আলী সহ অন্যান্য জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে গত জুলাই মাসে স্থানীয় ইরানি থানায় লিখিত অভিযোগ করে এবং কৈলাসহরের মহকুমা শাসক, ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক সহ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকদেরও লিখিত ভাবে জানায়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাগান শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে কৈলাসহরের মহকুমা শাসকের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।প্রায় দুই ঘন্টা অফিস ঘেরাও করার পর মহকুমা শাসকের অফিস থেকে ডিসিএম সূর্য দেববর্মা, ডিসিএম জয়ন্ত জমাতিয়া, ডিসিএম মানস মুড়াসিং বিক্ষোভরত বাগান শ্রমিকদের সাথে কথা বলে আশ্বাস দেন যে, আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করে ঘটনার নিস্পত্তি করবেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই আশ্বাস পাবার পর বাগান শ্রমিকরা ঘেরাও মুক্ত করে মহকুমা শাসকের অফিস। তবে, বাগান শ্রমিকরা আরও জানায় যে, প্রশাসন যদি কথার খেলাপ করে তাহলে বাগান শ্রমিকদের পক্ষ থেকে গোটা ঊনকোটি জেলায় আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে ।