আগরতলা, ২৯ জুলাই (হি.স.) : কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। আর মাত্র দিন-কয়েক পরই পরীক্ষা। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের দ্বিতীয় সত্রের দশ শতাংশ পাঠদান এখনও সম্পন্ন হয়নি। এই অচলাবস্থা আগরতলা কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের একলব্য পরিসরে। ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী ৩১ আগস্টের মধ্যে দ্বিতীয় সত্রের যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু অতিথি ও চুক্তি-ভিত্তিক শিক্ষকদের পুনর্নিযুক্তি না হওয়ায় প্রায় দু-মাস থেকে ঘরে বসে রয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাও লাটে।
পরিসরের কুলপতি না থাকায় তথাকথিত শিক্ষকদের ফাইল আটকে রয়েছে। যার ফল ভোগ করছেন ছাত্রছাত্রীরা। আগরতলা সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের কাছে এই খবর পাওয়া গিয়েছে। গোটা দেশে কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের (পূর্ববর্তী নাম রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থান) ১২টি পরিসর রয়েছে। প্রতিটি পরিসরেই ব্যাকরণ, জ্যোতিষ, বেদান্ত, সাহিত্য, বৌদ্ধদর্শন, শিক্ষা শাস্ত্রের পাশাপাশি হিন্দি, ইংরেজি, বাংলা, কম্পিউটার, রাজনীতি শাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দান করা হয়। আগরতলার শাখা বা পরিসরটিও তার ব্যতিক্রম নয়।
২০১৩ সালে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার রাধানগরে একলব্য পরিসরটি যাত্রা শুরু করে। ত্রিপুরা ছাড়াও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অসংখ্য ছাত্রছাত্রী সংস্কৃত শিক্ষা গ্রহণের জন্য এই পরিসরে এসে ভরতি হন। এখানে ৬০ শতাংশ প্রভাষকই অতিথি অথবা চুক্তি-ভিত্তিক পাঠদান করে থাকেন। তাঁদের প্রতি শিক্ষাবর্ষ শেষে একমাসের জন্য রেহাই দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান শিক্ষা বর্ষের মাঝখানে তাঁদেরকে রদ করার প্রায় দু মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও পুনর্নিযুক্তি না দেওয়ায় বিরাট অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কুলপতি না থাকার জন্য এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রাপ্ত সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও জানা গিয়েছে, মাস-দেড়েক আগে কুলপতির কার্যকাল সমাপ্ত হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পদটি খালি। নতুন কুলপতি যোগদান না করায় অথব ভারপ্রাপ্ত কুলপতি না থাকায় প্রয়োজনীয় ফাইলের কোনও কাজ এগোচ্ছে না। এই অচলাবস্থা ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত এক ঘোর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যার ফলে তাঁদের অবিভাবকরাও উদ্বিগ্ন।
এই অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিসরের নির্দেশকও। তিনি ছাত্রছাত্রী ও প্রভাষকদের দুর্দশার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠালেও এ পর্যন্ত কেবল আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি বলে প্রাপ্ত সূত্রের খবর। অপরদিকে, অস্থায়ী প্রভাষকরা কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে চিঠি পাঠিয়ে কুলপতি নিযুক্তির আগে প্রভাষকদের পুনর্নিযুক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন, যাতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত না ঘটে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রালয় ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত চিন্তা করে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিলে শিক্ষানুরাগী, ছাত্রছাত্রী সহ তাঁদের অবিভাবক ও অস্থায়ী প্রভাষকরা যে দুশ্চিন্তামুক্ত হবেন এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।