BRAKING NEWS

Trinamool seeks support : ত্রিপুরায় বিজেপিকে ঠেকাতে বামেদের সমর্থন চাইল তৃণমূল, মমতা ব্যানার্জীর থেকে বড় বামপন্থী গোটা দেশে একজনও নেই, বললেন ব্রাত্য বসু ও ঋতব্রত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ জুলাই ।। ত্রিপুরায় বিজেপিকে হারাতে বামেদের সমর্থন চাইল তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু আই-প্যাক ইস্যুতে ত্রিপুরায় এসে বামেদের উদ্দেশ্যে সাফ বলেছেন, বাংলার বাম নেতৃত্বের মতো ভুল করবেন না। ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জিকে সমর্থন করুন। কারণ, মমতা ব্যানার্জির মতো বামপন্থী সারা দেশে একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এদিকে, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি এক কদম এগিয়ে বামেদের নিশানা করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম সাইনবোর্ড থেকে স্ট্যাম্প পেপারে পরিণত হয়েছে। ত্রিপুরায় ওই পরিনতি থেকে বাঁচতে মমতা ব্যানার্জির হাত ধরুন।


প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকের সদস্যদের কথিত পুলিশী হেনস্থার প্রতিবাদে আজ কলকাতা থেকে আগরতলায় ছুটে এসেছেন ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং ঋতব্রত ব্যানার্জি। ত্রিপুরায় এসেই তাঁরা সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন এবং রাজ্যে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম হয়েছে বলে ক্ষোভ জানান। প্রসঙ্গক্রমে, ত্রিপুরায় বামেদের নিয়ে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে, তৃণমূল নেতৃত্ব সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বামেদের আমন্ত্রণ জানালেন।


ব্রাত্য বসুর কথায়, বামপন্থা খুবই গুরুত্বপূর্ন আদর্শ। কিন্ত, এ-দেশে শুধু নয় গোটা বিশ্বে বামপন্থায় ক্ষয় ধরেছে। তাই, ত্রিপুরার মানুষ বুঝে গেছেন বিজেপির বিকল্প বামপন্থা হতে পারে না। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ঝুলিতে শূন্য দিয়েছে জনগণ। ত্রিপুরাতেও তাই হতে যাচ্ছে। তাঁর দাবি, মানুষ বুঝতে পারছেন বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র মুখ মমতা ব্যানার্জি। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত বামপন্থী এবং ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন বিজেপিকে হারাতে মমতা ব্যানার্জীকে সমর্থন করুন। তিনি ত্রিপুরাবাসীকে মনে করিয়ে দিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মতো ভুল করবেন না। ত্রিপুরায় বামেদের উদ্দেশ্যে তাঁর সাফ কথা, পশ্চিমবঙ্গের মতো ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে মমতা ব্যানার্জীর হাত ধরুন।


এদিন ঋতব্রত ব্যানার্জী বলেন, বামফ্রন্টের ইজারা এখন সিপিএমের কাছে নেই। তাঁর কটাক্ষ, বাংলায় দেখেছি সাইনবোর্ড থেকে স্ট্যাম্প পেপারে পরিণত হয়েছে সিপিএম। তাঁর দাবি, পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে দেখা গেছে বিজেপিকে ঠেকাতে বামেরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। তিনি জোর গলায় বলেন, মমতা ব্যানার্জীর থেকে বড় বামপন্থী গোটা দেশে একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই দাবি লুফে নিয়ে সমর্থন করেন ব্রাত্য বসু। তিনিও এমনটাই মনে করেন বলে জানিয়েছেন।


প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার গতকাল তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির সমর্থনে সুর চড়িয়েছিলেন। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকের সদস্যদের পুলিশী নজরদারিতে রাখার ঘটনায় ত্রিপুরা সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেস ওই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদী হয়েছে। মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জি সকলেই ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। গতকাল সেই তালেই সুর মেলালেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। সিপিএম ও তৃণমূলের মতাদর্শগত পার্থক্য বিশাল, তবুও বিজেপি বিরোধী হওয়ায় প্রবীণ সিপিএম নেতা গা ভাসাতে কুন্ঠা বোধ করেননি বলেই মনে হয়েছে।
এদিকে, আজ তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরায় বামেদের একজোট হওয়ার খোলা আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাতে স্পষ্ট, বিজেপি বিরোধী মঞ্চে আগামী ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে ত্রিপুরাবাসী নয়া রাজনৈতিক মেরুকরণের স্বাক্ষী হতে চলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *