BRAKING NEWS

দেশে দিব্যাঙ্গনদের অধিকার সাম্যতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার : প্রতিমা ভৌমিক

নয়াদিল্লি, ২১ জুলাই (হি. স.) : দেশে দিব্যাঙ্গনদের অধিকার সাম্যতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই লক্ষ্যে দেশে আইন কার্যকর রয়েছে। একাধিক যোজনার মাধ্যমে তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। লোকসভায় সাংসদ প্রতিমা মন্ডলের দিব্যাঙ্গনদের অধিকার সুনিশ্চিত সম্পর্কিত তারকা চিহ্নবিহীন প্রশ্নের জবাবে ওই তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় বিচার ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রকের রাষ্ট্র মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক।


তিনি বলেন, দিব্যাঙ্গনদের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশন (ইউএনসিআরসিপিডি) -এ ভারত স্বাক্ষরকারী দেশ এবং ২০০৭ সালের ১ অক্টোবর নিশ্চিত করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকার ইউএনসিআরপিডি-র ভাবনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দিব্যাঙ্গন অধিকার আইন, ২০১৬ কার্যকর করেছে। ওই আইনে অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি দিব্যাঙ্গনদের ভেদাভেদ মুক্ত, সাম্যতা, ন্যায়বিচার পর্যন্ত পৌছানোর ক্ষমতার পরিবেশ তৈরি, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা, বিনোদন, ক্রীড়া কার্যক্রম ইত্যাদির জন্য বিভিন্নভাবে সক্ষমদের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।


তাঁর দাবি, ওই আইনে দিব্যাঙ্গনরাও অন্য ব্যক্তির মতো একই স্তরে তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আদেশ দিয়েছে। এই আইন ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। আইনের একটি অনুলিপি বাস্তবায়নের জন্য সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রনালয় / বিভাগ এবং পাশাপাশি রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে প্রচারিত হয়েছে। তিনি বলেন, দিব্যাঙ্গনদের অধিকারের বিধি ২০১৭ সালের ১৫ জুন বিজ্ঞপ্তি আকারে জারি হয়েছিল। এছাড়াও, শারীরিক পরিবেশ, পরিবহন ব্যবস্থা এবং আইসিটি বাস্তুতন্ত্রে দিব্যাঙ্গনদের জন্য বাধা-মুক্ত পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে সরকার সুগম্য ভারত অভিযানও চালু করেছে।


প্রতিমা ভৌমিক জানান, ২০১৫ সালে জাতিসংঘের সম্মেলনে ভারতে দিব্যাঙ্গনদের অবস্থা সম্পর্কিত দেশের প্রথম প্রতিবেদনটি কেন্দ্রীয় সরকার জাতিসংঘের কমিটিতে জমা দিয়েছিল। ২০১৯ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর চলাকালীন জেনেভাতে অনুষ্ঠিত ২২তম অধিবেশনে জাতিসংঘের কমিটি এই প্রতিবেদনটি বিবেচনা করেছিল। এছাড়াও, দিব্যাঙ্গনদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা এবং কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সাথে মিলে প্রচেষ্টা করছে।


তাঁর কথায়, শারীরিক পরিবেশ, পরিবহন ব্যবস্থা এবং আইসিটি ইকো ব্যবস্থায় দিব্যাঙ্গনদের জন্য বাধা-মুক্ত পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সুগম্য ভারত অভিযান চালু করেছিল। দীনদয়াল দিব্যাঙ্গন পুনর্বাসন প্রকল্প (ডিডিআরএস)-র আওতায় দিব্যাঙ্গনদের পুনর্বাসন সম্পর্কিত প্রকল্পগুলির জন্য এনজিও অথবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে অনুদান-সহায়তা প্রদান করা হয়। মূলত তার মাধ্যমে দিব্যাঙ্গনদের সহায়তা করার লক্ষ্য নিয়ে তাদের সর্বোত্তম, শারীরিক, সংজ্ঞাবহ, বৌদ্ধিক, মনস্তাত্ত্বিক বা সামাজিক ক্রিয়াকলাপ স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম করে।

তিনি বলেন, সহায়ক যন্ত্র এবং সহায়ক উপকরণ ক্রয় অথবা লাগানোর জন্য দিব্যাঙ্গনদের (এডিআইপি) সহায়তা করা হচ্ছে। টেকসই, পরিশীলিত ও বৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি, আধুনিক, মানক সহায়ক এবং যন্ত্রগুলির সহায়ক উপকরণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহায়তা সরবরাহ করা হয়। তাতে তাদের অক্ষমতার প্রভাবগুলি হ্রাস করে এবং তাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বাড়িয়ে তাদের শারীরিক, সামাজিক এবং মানসিক পুনর্বাসন নিশ্চিত করছে। এই স্কিমে পাঁচ বছরের বাচ্চা দিব্যাঙ্গন শিশুদের শ্রবণ শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য কোচ্লিয়ার ইমপ্লান্ট সরবরাহেরও বিধান রয়েছে।


সাথে তিনি যোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রাক-ম্যাট্রিক (নবম ও দশম শ্রেণির জন্য), পোস্ট ম্যাট্রিক (দ্বাদশ শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি / ডিপ্লোমা স্তরের জন্য), উচ্চশিক্ষা (বিজ্ঞাপিত প্রতিষ্ঠানে) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি জাতীয় বৃত্তি প্রদান, জাতীয় ফেলোশিপ (এমফিল এবং পিএইচডি কোর্স), দেশীয় ও বিদেশী বৃত্তি (পিজি / ডক্টরাল পর্যায়ে বিদেশী শিক্ষার জন্য) প্রদান করছে। দক্ষ প্রশিক্ষণের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনাটির উদ্দেশ্য হল দিব্যাঙ্গনদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর দক্ষতা সরবরাহ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *