আগরতলা, ৬ জুলাই (হি. স.) : ত্রিপুরার সুস্বাদু কাঠাল রওয়ানা দিল সদুর দুবাই। আজ প্রায় ৬০০ কেজি কাঠাল দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল ২ মেট্রিক টন কাঠাল ইংল্যান্ড যাবে। ত্রিপুরার কৃষিজ পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা বৃদ্ধিতে আগামীদিনে ত্রিপুরার কৃষকরা দারুন উপকৃত হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ-বিষয়ে ত্রিপুরা উদ্যানপালন দফতরের অধিকর্তা ড. ফণী ভূষণ জমাতিয়া বলেন, আজ বেসরকারী সংস্থার মাধ্যমে দুবাইতে কাঠাল পাঠানো হয়েছে। ইতিপূর্বে পরীক্ষামূলকভাবে ইংল্যান্ড কাঠাল পাঠানো হয়েছিল। আজ প্রায় ৬০০ কেজি কাঠাল দিল্লি হয়ে দুবাই যাচ্ছে। তাঁর কথায়, গত মাস থেকেই কাঠাল বিদেশে রপ্তানি করা শুরু হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ১২০০ কেজি কাঠাল ইংল্যান্ড পাঠানো হয়েছিল। ওই কাঠাল তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। আগামীকাল ২ মেট্রিক টন কাঠাল গুয়াহাটি হয়ে ইংল্যান্ড যাবে।
তিনি জানান, ত্রিপুরা সরকার সরাসরি কৃষিজ পণ্য বিদেশে রপ্তানি করছে না। তবে, চাহিদা অনুযায়ী অর্ডার বেসরকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়। তারাই পাঠানোর যাবতীয় ব্যবস্থা করে থাকেন। তাঁর বক্তব্য, পণ্যের মূল্য এবং গুণমান সমস্ত কিছুই বেসরকারী সংস্থা নির্ধারণ করছে। ত্রিপুরা সরকার শুধুই যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরার কাঠাল ইতিমধ্যে দেশীয় বাজারে দারুন চাহিদা রয়েছে। কর্ণাটক, ভুবনেশ্বর থেকে ইতিমধ্যে প্রচুর অর্ডার আসছে। এখন বিদেশে রপ্তানির মাত্রা বেড়ে গেলে কৃষকরা আরও উপকৃত হবেন।
এদিন তিনি জানান, ইংল্যান্ড-এ ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের কাঠাল পাঠানো হয়েছিল। কিন্ত, দুবাইতে ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের এবং গোলাকৃতি ধরনের কাঠালের চাহিদা ছিল। সে মতোই কাঠাল দুবাইতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, ইংল্যান্ড থেকেও কাঠালের গুনমান সন্তোষজনক বলে জানানো হয়েছে। তাই, আগামীকাল ২ মেট্রিক টন কাঠাল ইংল্যান্ড-র উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবে। তাঁর মতে, প্রত্যেক কাঠালে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে, রপ্তানি বাড়লে কৃষকরা আরও উপকৃত হবে।
ড. ফণী ভূষণ জমাতিয়া বলেন, দেশীয় বাজারে এপিডা-র মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করা হয়। চাহিদা অনুসারে আমাদের কাছে অর্ডার আসে। সেই মতো নথিভুক্ত সংস্থাকে পণ্য রফতানির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্যের সমস্ত এগ্রিকেটার এবং ফুড প্রোডাক্টের সঙ্গে যুক্ত সংস্থার তালিকা রয়েছে । আরও অনেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু করোনার অতিমারীর জন্য তাদের তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। না হলে আরও অনেকবেশী পরিমানে বিভিন্ন রকমের পণ্য পাঠানো যেত।
তাঁর কথায়, আগরতলা বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু হলে পণ্য রফতানিতে আমাদের সুযোগ আরও বাড়বে। তখন দিল্লি বা গৌহাটি হয়ে পণ্য পাঠানোর প্রয়োজন হবে না। তাতে সময় কম লাগবে। তিনি বলেন, কাঁঠাল বিদেশে ছাড়াও দেশের মধ্যে কর্নাটক, ভুবনেশ্বর থেকে অর্ডার আসছে। ওই সমস্ত জায়গা থেকেও এপিডা-র মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ত্রিপুরার বিখ্যাত কুইন প্রজাতির আনারস করোনার কারণে পাঠানো যায় নি। আনারস নেওয়ার জন্য দুই-তিনটি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। দেশের মধ্যে অনেক জায়গাতে আনারস পাঠানো হয়েছিল। কিন্ত, করোনার প্রকোপ না থাকলে আরও বেশি পরিমানে পাঠানো সম্ভব হতো। তাঁর দাবি, এখন কাঁঠাল চাষ করার জন্যে কৃষকদের উৎসাহ করা হচ্ছে। ত্রিপুরা সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের স্কীমে স্ব-উদ্যোগে কাঠাল চাষের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।