BRAKING NEWS

Tripura CPM : ত্রিপুরায় আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র ভূলুন্ঠিত, সুর চড়ালেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক

আগরতলা, ৬ জুলাই (হি. স.) : রাজ্যে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নেই বলে সুর চড়ালেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস। এনএলএফটি সন্ত্রাসবাদীরা নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে বলেও তিনি গভীর চিন্তা ব্যক্ত করেছেন। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এ-সমস্ত বিষয় তুলে ধরে তিনি ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তাঁর কথায়, বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের আমলে রাজ্যে আইনের শাসন ভূলুন্ঠিত। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব বিষয়ে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে, তীব্র সমালোচনার সুরে বলেন তিনি।


এদিন তিনি দাবি করেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকলেও পুলিশ সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে। সংবিধান ও আইন যে দায়িত্ব দিয়েছে সেই দায়িত্ব পালন করছে না পুলিশ। তারা শাসকদলের নির্দেশে কাজ করে চলেছে। তাঁর অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই রাজ্যে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সাথে বাড়ছে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা। এ বিষয়ে তিনি সাম্প্রতিককালে তেলিয়ামুড়া থানাধীন মহারানী পুর এলাকায় ৪ জনকে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। কাঞ্চনপুরেও এ-ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয়, রাজ্যে নারী নির্যাতন ও যৌন নির্যাতন সহ প্রতিদিন খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, লাশ উদ্ধার ইত্যাদির ঘটনা বেড়েই চলেছে, উষ্মা প্রকাশ করেন।


তিনি উদ্বেগের সুরে বলেন, রাজধানী আগরতলা শহরে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অতি সম্প্রতি আগরতলা পশ্চিম থানার নাকের ডগায় এক ভিখারিনী বৃদ্ধার সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। সাথে তিনি যোগ করেন, রাজ্যে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক প্রচারণা চালাতে না পারে সেজন্যই কোভিডকে ব্যবহার করা হচ্ছে, বলে তিনি ত্রিপুরা সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করেছেন।


তিনি আজ ক্ষোভের সুরে বলেন, মঙ্গলবার রাজধানী আগরতলা শহরে চাকুরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষকরা গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ আন্দোলন করতে গেলে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। এ-ধরনের কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, সারা ভারত কিষান মোর্চার রাজ্য সম্পাদক পবিত্র করের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে। যা ইতিপূর্বে বাদল চৌধুরীর সাথে করেছে ত্রিপুরা সরকার। তাঁকে অযথা জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। এদিন তিনি প্রশাসনের এ-ধরনের দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।


সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক আজ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজ্যে এনএলএফটি সন্ত্রাসবাদীদের কার্যকলাপ নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমা এবং ধলাই জেলার লংতরাইভেলী মহকুমায় এনএলএফটি সন্ত্রাসবাদীরা নতুন করে সদস্যপদ সংগ্রহ করতে শুরু করেছে। রাজ্যে কাজের ভীষণ অভাব, তাই যুবকরা সন্ত্রাসবাদীদের আহবানে সাড়া দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের যুক্ত হচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, সন্ত্রাসবাদীরা যুবকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে জঙ্গি শিবিরে নিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিক দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সাথে তাঁর পরামর্শ, ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদি দলে যারা যোগ দিয়েছে তাদের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।


একই সাথে আজ তিনি তিপ্রা মথার কার্যকলাপকেও পরোক্ষে সমালোচনা করেন। তিপ্রা মথার সভাপতি বিজয় রাঙ্খলই রাজ্যে সন্ত্রাসবাদীদের জন্মদাতা বলে নিশানা করেন। তাঁর দাবি, সন্ত্রাসবাদীদের হাতে রাজ্যের বহু সিপিআইএম নেতা কর্মী সমর্থক সহ সাধারন মানুষ খুন হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *