নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ মে৷৷ রাজ্যে করোনা-র দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে৷ রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বকালের রেকর্ড সংখ্যক নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণের হার খুবই সামান্য৷ গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫,৮৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ তাতে ৩৯৪ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সংক্রমণের হার ২.৫৫১ শতাংশ৷ অন্যদিকে, করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৮৭৩ জন৷
এই তথ্য তুলে ধরে আজ শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ কিছু রাজনৈতিক দলকে বিঁধেছেন৷ তাঁর কটাক্ষ, ত্রিপুরা করোনা মোকাবিলায় ভালোভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে কিছু রাজনৈতিক দলের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরার মতো ছোট্ট রাজ্য সর্বাধিক নমুনা পরীক্ষার ধারা বজায় রেখেছে৷ তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাকালে সর্বাধিক নমুনা পরীক্ষা হয়েছে৷ জেলাভিত্তিক হিসাব তুলে ধরে তিনি বলেন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫,৫৪২ জনের৷ তাতে ১৭৩ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ আক্রান্তের হার ৩.১২ শতাংশ৷ তিনি বলেন, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭,১০২ জনের এবং তাঁদের ৮৩ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে৷ সংক্রমণের হার ১.১৭ শতাংশ৷
এছাড়া, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১,০২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ২০ জন করোনা আক্রান্ত হিসেবে সন্ধান মিলেছে৷ আক্রান্তের হার ১.৯৬ শতাংশ৷ তিনি জানান, সিপাহিজলা জেলায় ৫৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩০ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সংক্রমণের হার ৫.৩১ শতাংশ৷ খোয়াই জেলায় ১৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৫ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে এবং সংক্রমণের হার ১১.২৮ শতাংশ৷ গোমতি জেলায় ৪৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে এবং সংক্রমণের হার ৫.৪৫ শতাংশ৷ ধলাই জেলায় ৫৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ২৭ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সংক্রমণের হার ৪.৫২ শতাংশ৷ এছাড়া, উনকোটি জেলায় ২৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ২২ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ আক্রান্তের হার ৭.৮৩ শতাংশ৷
এদিন তিনি আরও জানান, মে মাসে ধারাবাহিকভাবে নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধি হয়েছে৷ ১ মে ৫,৩১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ সেই ধারা বেড়ে ৩০ মে ১৫,৬৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, মাঝে আক্রান্তের হার বেড়েছিল৷ গত কয়েকদিনে সংক্রমণের সংখ্যায় হ্রাস নজরে এসেছে৷ তাঁর দাবি, নমুনা পরীক্ষায় বৃদ্ধির জেরে মাঝে সংক্রমণের হার বেড়ে হয়েছিল ৯.৭৬ শতাংশ৷ গতকাল সেই সংক্রমণের হার কমে দাড়িয়েছে ২.৫১ শতাংশ৷ তিনি বলেন, চলতি মাসে ৩০ মে পর্যন্ত ২,৩৮,১৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাতে, ১৫,৭৯১ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে৷ সংক্রমণের মাসিক হার ৬.৬৩ শতাংশ৷ সাথে তিনি যোগ করেন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ৭১,০৬১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭,৯৯২ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সংক্রমণের হার ১১.২৫ শতাংশ৷ তেমনি আগরতলা পুর নিগম এলাকায় ১৯,৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩,৪৫০ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সংক্রমণের হার ১৭.৭৩ শতাংশ৷
তাঁর দাবি, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা করোনা আক্রান্তে সারা রাজ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে৷ তেমনি, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার অন্তর্গত আগরতলা পুর নিগম এলাকায় সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে৷ তবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা প্রকোপে লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷

