/গত বছরের তুলনায় এবছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মৃতের হার বেড়েছে, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে সংক্রমণ উর্ধমুখী, উদ্বিগ্ন ডোনার মন্ত্রী

গত বছরের তুলনায় এবছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মৃতের হার বেড়েছে, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে সংক্রমণ উর্ধমুখী, উদ্বিগ্ন ডোনার মন্ত্রী

নয়াদিল্লি, ২৫ মে : ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে করোনা-র সংক্রমণ উর্ধমুখী। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এবছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে করোনা-য় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি-তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডোনার মন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিং। আজ তিনি আট রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব-দের সাথে এ-বিষয়ে বৈঠক করেছেন।

উত্তর – পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কর্মীবর্গ, জনঅভিযোগ, পেনশন, আনবিক শক্তি ও মহাকাশ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ড. জিতেন্দ্র সিং সম্প্রতি উত্তর – পূর্বাঞ্চলে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায়, পরিস্থিতির পর্যালোচনার জন্য একটি জরুরী বৈঠকে অংশ নেন।

আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, অরুণাচলপ্রদেশ, সিকিম, মণিপুর, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড ౼ উত্তর – পূর্বাঞ্চলের এই ৮টি রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব, উত্তর – পূর্বাঞ্চলীয় মন্ত্রকের সচিব, উত্তর – পূর্বাঞ্চল পরিষদের সচিব এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উত্তর – পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব এই বৈঠকে অংশ নেন।

কয়েকটি সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, উত্তর – পূর্বাঞ্চল কোভিড সংক্রমণে “হটস্পট” হতে চলেছে। ড. সিং বলেছেন, আগের বারের মহামারির সময় দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় উত্তর – পূর্বাঞ্চলে কোভিড সংক্রমণ খুবই কম ছিল। তখন লকডাউনের সময় সিকিমে কেউ করোনায় সংক্রমিত হন নি। কিন্তু এবছর গত দু’সপ্তাহে উত্তর – পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে করোনা সংক্রমণের হার উর্ধমুখী। তিনি বলেছেন, এই অঞ্চলের ৮টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে এবং রাজ্যগুলি যখনই কোনো ধরণের সহযোগিতা চাইছে, তৎক্ষণাৎ তাদের সাহায্য করা হচ্ছে। উত্তর – পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা সংক্রমণের উর্ধমুখী হারকে নিয়ন্ত্রণ করে নিম্নমুখী করতে হবে।

এই প্রসঙ্গে ড. সিং বলেছেন, আজ সকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে সংক্রমণ উর্ধমুখী। নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও অরুণাচলপ্রদেশের কয়েকটি জেলায় বাকি অংশের তুলনায় সংক্রমণের হার বেশি।

মন্ত্রী, পরিস্থিতির মোকাবিলায় কঠোরভাবে নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যারা আসবেন, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে, কোভিড আচরণ বিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে এবং প্রয়োজন হলে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন গড়ে তুলতে হবে।

ড. সিং জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহগুলিতে উত্তর – পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্র, পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা পাঠাবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেছেন, উত্তর – পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে কোভিড এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রস্তাব অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তৈরি করতে হবে। এই ধরণের প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পৌঁছালে তা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। রাজ্যগুলির পাঠানো প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে দোসরা জুন মন্ত্রক একটি বৈঠক ডেকেছে। কিন্তু এপর্যন্ত চারটি রাজ্য এসংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দিয়েছে। মন্ত্রী, বাকি রাজ্যগুলিকে দ্রুত প্রস্তাব জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মহামারি নিয়ন্ত্রণের জন্য যা যা প্রয়োজন – হাসপাতাল, অক্সিজেন প্ল্যান্ট, ভ্রাম্যমান নমুনা পরীক্ষাগার সহ বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহের প্রস্তাব আসলে সেগুলি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ড. সিং আরো বলেছেন, কোভিডের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি এবং এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে তিনি ৮টি রাজ্যের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। মহামারি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সব রকমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তর – পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে হাসপাতালের শয্যা ও অক্সিজেনের মজুতের বিষয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মন্ত্রক এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চল পরিষদ কোভিড সংক্রান্ত পরিকাঠামো সম্প্রসারণের জন্য সক্রিয়। তিনি জানিয়েছেন, ৮টি রাজ্যের সবকটিতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট গড়ে তোলার জন্য জাপান ও ইউএনডিপি সাহায্য করছে।

তিনি আরো বলেছেন, যেভাবে কোভিড – ১৯ মহামারির প্রথম পর্যায়ে ৮টি রাজ্য পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিল, তা সারা দেশের কাছে অনুকরণীয় ছিল। কিন্তু কোভিড – ১৯ এর দ্বিতীয় পর্বে গত বছরের তুলনায় এবছর এই অঞ্চলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর হার কমানোর জন্য আগামী সপ্তাহের মধ্যে পদস্থ আধিকারিকদের একটি সুসংহত পরিকল্পনা তৈরির তিনি নির্দেশ দিয়েছেন।