আগরতলা, ১৮ মে (হি.স.) : ত্রিপুরার ২০টি বিদ্যালয়কে স্পেসিফাইড ক্যাটাগরির স্কুল হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। এছাড়া, প্রথম থেকে চতুর্থ এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ। তাঁর কথায়, করোনা-প্রকোপের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, পুনরায় বিদ্যালয়গুলিতে স্বাভাবিক পঠন-পাঠন শুরু হলে সকলের মূল্যায়ন করা হবে। তাতে কোনও ছাত্রছাত্রী নম্বর কম পেলেও তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে।
এদিন তিনি বলেন, শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে গুণগত শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে বর্তমান সরকার। যে স্কুলগুলিকে স্পেসিফাইড ক্যাটাগরির স্কুল হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলি হল শিশুবিহার দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়, উমাকান্ত অ্যাকাডেমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, হেনরি ডিরোজিও অ্যাকাডেমি এইচএস স্কুল, ড. বিআর আম্বেদকর ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, খুমুলুঙের খুমপুই অ্যাকাডেমি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, জিরানিয়া মহকুমার সুকান্ত অ্যাকাডেমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, বিশালগড় ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, সোনামুড়া ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, উদয়পুর সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, অমরপুর সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, বিলোনিয়া সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, সাব্রুম সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, তেলিয়ামুড়া সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, খোয়াই সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, কমলপুর সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, ছৈলেংটা সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, কৈলাসহরের নেতাজি বিদ্যাপীঠ ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল, খ্রিশ্চান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, ধর্মনগরের গোল্ডেন ভ্যালি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল এবং কাঞ্চনপুর সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম এইচএস স্কুল।
তাঁর কথায়, ত্রিপুরার যে কোনও প্রান্তের ছেলেমেয়েরা এই সকল স্কুলে পড়ার সুযোগ পাবে। সিবিএসসি-র ধাঁচে জাতীয়মানের শিক্ষাদান প্রক্রিয়ার পাশাপাশি এই স্কুলগুলিতে থাকবে প্রত্যেকটি বিষয়ের বিষয় শিক্ষক, ল্যাব, লাইব্রেরি, নির্দিষ্ট খেলার মাঠ, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রতিটি শ্রেণিতে ৪০ জনের বেশি ছাত্রছাত্রী থাকতে পারবে না। তিনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশমান পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা এই বিদ্যালয়গুলিতে পড়ার সুযোগ পাবে। এই স্কুলগুলিতে ভরতির ক্ষেত্রে লটারি, স্ক্রিনিং টেস্টের মধ্য দিয়ে যেতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং প্রধানশিক্ষকের নিযুক্তির ক্ষেত্রেও সরকারি শিক্ষকদের থেকে বিশেষ পরীক্ষার মধ্যমে নির্বাচন করা হবে। মডেল স্কুলের আদলেই গড়ে তোলা হবে এই সব স্পেসিফাইড ক্যাটাগরির বিদ্যালয়গুলিকে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিদ্যালয়গুলিতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি ২৫ মে থেকে বাড়িয়ে ৬ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি, ষষ্ঠ শ্রেণি এবং সপ্তম শ্রেণির পরবর্তী শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীদের উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষাদফতর। আজ মন্ত্রিসভায় এ-বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির পাশ-ফেল প্রথার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা থাকায় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে, বলেন তিনি। সাথে তিনি যোগ করেন, নবম এবং একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ক্ষেত্রে মধ্যশিক্ষা পর্যদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তাঁর সাফ কথা, এই পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যখন বিদ্যালয় খোলা হবে তখন পরীক্ষায় বসতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পরবর্তী শ্রেণির নতুন বই বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয় খুললে তারা সেই সব বই পেয়ে যাবে।