BRAKING NEWS

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলাতন্ত্র

অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ২৩ এপ্রিল (হি. স.) : ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুখ্যসচিব পদে সঞ্জয় মিত্রের স্থলাভিষিক্ত হন। তাঁর আগে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব পদে ছিলেন বাসুদেববাবু। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— উভয়ের খুব পছন্দের আমলা ছিলেন। জেলায় জেলায় প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
২০১৬-র বিধানসভা ভোটের প্রচার-সভায় আসানসোলকে আলাদা জেলা করার প্রতিশ্রতি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আচরণবিধি ভেঙেছেন — এই যুক্তিতে তাঁকে শো-কজ করে কমিশন। কিন্তু মমতার নির্দেশে সেই চিঠির জবাব দেন মুখ্যসচিব বাসুদেববাবু। তাতে তিনি জানান, ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী আচরণবিধি ভাঙেননি। বাসুদেববাবু ওই চিঠিতে লেখেন, কমিশনের উচিত শো-কজ করার আগে ভাল করে সব দিক খতিয়ে দেখা।

’১৬-র ভোটের মুখে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে সরিয়ে দেয় কমিশন। এর পরে কমিশনকে একটি চিঠি পাঠান মুখ্যসচিব। এই ধরনের পদক্ষেপে বাহিনীর মনোবল ভেঙে যেতে পারে বলে ওই চিঠিতে জানান মুখ্যসচিব। এর পরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যের দায় থাকবে না বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে মুখ্যসচিবের জবাব দেওয়া নিয়ে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। কমিশনের কাছে বাসুদেববাবুকে শাস্তি দেওয়ার দাবিও জানানো হয়।

এর পরেই কমিশন মমতার বাড়িতে ফের শোকজের চিঠি পাঠিয়ে তাঁকেই জবাব দিতে বলে। জানিয়ে দেয় মুখ্যমন্ত্রী নয়, চিঠি পাঠানো হয়েছে তৃণমূলের চেয়ারপার্সনকে। একই সঙ্গে মুখ্যসচিবকে দু’টি চিঠি পাঠায় কমিশন। একটিতে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠির জবাব মুখ্যসচিব দিতে পারেন না। কমিশন সম্পর্কে কড়া শব্দ ব্যবহার করাটাও যে নির্বাচন সদন ভাল চোখে দেখছে না তাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় চিঠিতে রাজীব কুমারের অপসারণ নিয়ে তাঁর মন্তব্যের জন্য বাসুদেববাবুকে ভৎর্সনা করে কমিশন। নির্বাচন সদনের পক্ষে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সব সময়েই রাজ্যের দায়। ভোটের কিছুকাল বাদে, ২০১৭-তে তিনি অবসর নেন।

২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর প্রথম বড় রদবদল হয় ২০১৭-র ১ জুলাই। রাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব হন অত্রি ভট্টাচার্য। ওই দিনই মুখ্যসচিব হিসেবে মেয়াদ শেষ হয় বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর জায়গায় নতুন মুখ্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন ১৯৮৫ ব্যাচের আইএএস, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *