BRAKING NEWS

তৃতীয় দফার নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত অশান্তির চিত্র দেখল রাজ্যবাসী

হুগলি, ৬ এপ্রিল (হি. স.) : বঙ্গে শুরু  হয়েছে সরকার গঠনের হাইভোল্টেজ ভোট,এর জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঢেলে সাজানো হয়েছে ভোট বৈতরণী পার হবার জন্য। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ভোট মোটের ওপর শান্তিপূর্ণ হলেও তৃতীয় দফার ভোটে জায়গায় জায়গায় বিভিন্ন অশান্তি দেখা গেল। প্রশ্ন উঠছে নির্বাচন কমিশনের নিরাপত্তার বিষয়ে।


হুগলি মোট ১৮ টি বিধানসভা, এর মধ্যে মঙ্গলবার ৮ টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হল।কিন্তু এই ৮ বিধানসভার কেন্দ্রে সকাল থেকেই  বিক্ষিপ্ত অশান্তির চিত্র দেখলো রাজ্যবাসী। কখনও খোদ পার্থীকেই বাঁশ দিয়ে পেটানো হল, আবার কোনোও কোনোও কেন্দ্রে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষ। সকাল ৭ টা গোঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের শ্যামবাজার এলাকার বেলডিহাতে শ্যমবাজার বিবেকানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজেপি এজেন্টকে ঢুকতে বাধা।বিজেপির এজেন্ট সহ তিনজনকে মারধোর করা হয় বলে তৃণমূলের দিকে অভিযোগ। অপরদিকে আহতদের হাসপাতালে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠে।অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতির বিরুদ্ধে।যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এরপরই আরামবাগের গৌরহাটি এক অঞ্চলে শুভয়পুর গ্রামে আরামবাগ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পলাশ রায়ের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে যদিও বিজেপি কর্মীরা জানান তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে এই ঘটনা। আরামবাগ পারুল হাইস্কুলের সামনে বিজেপির এজেন্টের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।

আরামবাগে বিজেপি পার্থী সুজাতা মন্ডলকে মারধোরের ঘটনা ঘটে। এই তৃণমূল পার্থীর অভিযোগ মঙ্গলবার আরামবাগের আরান্ডি গ্রামে তিনি ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণে গেলে তাকে বাঁশ নিয়ে তাড়া করেন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সুজাতার দাবি, ওই গ্রামে আমাদের ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমি তাদের ভোটদানের ব্যবস্থা করতে গেলে হামলা হয়।এমনকি বাঁশের বাড়ি পড়ে সুজাতাদেবীর মাথায়। মাঠের ওপর দিয়ে দৌড়ে কোনওক্রমে পালান তৃণমূল প্রার্থী। সুজাতাদেবী দাবী করেন  ‘আরামবাগে একাধিক বুথের দখল নিয়েছে বিজেপি। যে সব বুথে আমরা শক্তিশালী সেখানে তৃণমূলে ভোট দিলে বিজেপিতে চলে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন অবশ্য এই ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।

অন্যদিকে সরাসরি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিকে একেবারে বুথের মধ্যে বিজেপি কে ভোট দেবার জন্য বলা হয় ব অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোঘাটের ফুলজলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।এর খবর চাউর হতেই ভোটারদের সাথে কেন্দ্রী বাহিনীর গন্ডগোল শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ সিআরপিএফ এর তরফ থেকে বিজেপিকে ভোট দিতে বলে,এর প্রতিবাদে মারধরও করা হয় ভোটারদের, যদিও সিআরপিএফ এর পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি খানাকুলের হীরাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রে আবার অভিযোগের কাঠগড়ায় তৃণমূল। অভিযোগ, হীরাপুর গ্রামে ৫০০-র মত লোককে আটকে দেয় তৃণমূল। অভিযোগ, তাঁদের ভোট দিতে বুথে আসতে দেওয়া হচ্ছিল না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। আধাসেনা জওয়ানরা গিয়ে তাঁদের ভোট দিতে নিয়ে আসে।

হুগলির একাধিক জায়গা থেকে অশান্তির খবরের মধ্যে  খানাকুলে তৃণমূল প্রার্থী মুন্সি নাজবুল করিমকে মাটিতে ফেলে চ্যালা কাঠা দিয়ে মার এবং তাঁর এজেন্টকেও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কাঠগড়ায় বিজেপি। যদিও বিজেপির তরফে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই কড়া পদক্ষেপ করেছে কমিশন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে জেলা প্রশাসনকে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

এদিকে  তৃণমূলের বুথ সভাপতির মৃতকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোঘাট। মৃতের নাম সুনীল রায়।  বাড়ি গোঘাটের ফলুই এলাকায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। মৃত ওই ব্যক্তি তৃণমূলের বুথ সভাপতি ।ছেলে বুথের এ্যজেন্ট। তৃণমূলের অভিযোগ,  এদিন ভোট দিয়ে ফেরার পথে,  বিজেপি কর্মীরা তাকে ঘিরে ঠেলাঠেলি করে। সেখানেই পরে গিয়ে মৃত্যু হয়। বিজেপি কর্মীরা পরিকল্পনা করেই খুন করেছে বলে অভিযোগ গোঘাটের তৃণমূল প্রার্থীর। যদিও অভিযোগ অস্বীকার বিজেপির। ঘটনাকে ঘিরে ফের রাজনৈতিক চাপা উত্তেজনা গোঘাট জুড়ে।

তারকেশ্বরেও বিজেপি পার্থী স্বপন দাশগুপ্তর নির্বাচনী এজেন্টকে আটকে রেখে তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে তৃনমুলের অভিযোগ। হরিপালেও বিজেপি ও তৃনমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় ওঠে এলাকা।হাসপাতালে ভর্তি দু’পক্ষেরই। সব মিলিয়ে হুগলি জেলায় এই তৃতীয় দফার ভোটে বিভিন্ন অশান্তির ঘটনার সাক্ষী রইল হুগলি সহ গোটা রাজ্য বাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *