কলকাতা, ৩০ মার্চ (হি স)। ‘’আমার কাছে খবর আছে নিজেদের একটা মেয়েকে খুন করবে। তার পর তৃণমূলের উপর দোষ চাপাবে। দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।’’ প্রচারের শেষবেলায় এভাবেই
নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন ভাঙাবেড়া শহীদ বেদী থেকে সোনাচূড়া বাজার পর্যন্ত রোড-শো টানা ৩ কিলোমিটার হুইলচেয়ার করেই পথযাত্রা করলেন তৃণমূল নেত্রী। এর পরে দুপুর ১টায় সোনাচূড়ায় করলেন সংক্ষিপ্ত জনসভা। আর সেখান থেকেই তিনি আক্রমণ শানলেন প্রতিপক্ষকে। সেই সঙ্গে সতর্ক করে দিলেন নন্দীগ্রামবাসীকে।
এদিন সোনাচূড়ার সভা থেকে একদিকে মমতা যেমন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নন্দীগ্রামবাসীকে তেমনি বহিরাগত পুলিশকে নিয়েও সরব হয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছি কারণ আমি নন্দীগ্রামের ভূমিকে প্রণাম জানাই। এবারে জয়ী হলে নন্দীগ্রামকে ‘‘মডেল নন্দীগ্রাম’ বানিয়ে দেব। হলদিয়া আর নন্দীগ্রামের মধ্যে সেতু গড়ে দেব। হলদিয়ায় নন্দীগ্রামের ছেলেমেয়েরা কাজ পাবে, চাকরি করবে। কর্মসংস্থানের জোয়ার বইবে।“
তৃণমূলনেত্রী বলেন, “আমি যখন এক বার ঢুকেছি, আর বেরোচ্ছি না। বিজেপিকে নন্দীগ্রাম থেকে বাংলা পর্যন্ত একেবারে বোল্ড আউট করে দিন। যারা গুন্ডামি করছে তাদের রাজনৈতিক ভাবে কবর দিন। কেউ ভয় দেখালে ভয় পাবেন না। আমার কাছে খবর আছে নিজেদের একটা মেয়েকে খুন করবে। তার পর তৃণমূলের উপর দোষ চাপাবে। দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।“
মমতা বন্দ্যৌপাধ্যায় বলেন, “বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে গুন্ডাদের নিয়ে আসছে। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব কেন বিহার উত্তরপ্রদেশের গুন্ডাদের এখানে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করছে, তাই রাজ্যের পুলিস একটু বিরোধিতা করবে। তবে ভোটের পর পুলিস তো আমাদের। তাই চিন্তা করবেন না। কেন্দ্রীয় বাহিনী অত্যাচার করলেই রুখে দাঁড়ান সবাই মিলে।’’
একই সঙ্গে মমতা বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা খেয়েছে বেইমান, গদ্দার। এখন টাকা দিচ্ছে। কাউকে দুশো টাকা, কাউকে ৫০০টাকা দিচ্ছে। টাকা দিলে খেয়ে নেবেন। শাড়ি দিলে পর্দা বানিয়ে নেবেন। ভিন রাজ্যের পুলিশ এসে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। অত্যাচার করছে। ভোটের পর ভিন রাজ্যের পুলিশ থাকবে না। আপনারাই থাকবেন আর রাজ্য পুলিশ থাকবে। মাথা ঠান্ডা রাখুন। রাজ্য পুলিশই আপনাদের দেখবে। ভোটের পর পাণ্ডাদের দেখে নেব। তখন তাঁদের সব ঠান্ডা হয়ে যাবে।’’
আজ বিকাল ৫টায় শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রচারের সময়সীমা। আর তার ৩৮ ঘন্টা বাদে বুথমুখী হবেন নন্দীগ্রামবাসী। প্রয়োগ করবেন তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার, দেবেন ভোট। তবে সেই ভোট কার দিকে যাবে তা ২ মে’র আগে জানা যাবে না। তাই ভোট প্রচারের শেষদিনে তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর প্রচারে খামতি দিচ্ছেন না।