নয়াদিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): কৃষকদের আন্দোলন সম্পর্কিত সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি টুলকিট ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য গ্রেফতার হওয়া পরিবেশকর্মী দিশা রবির তিন দিনের বিচারবিভাগীয় হেপাজতের নির্দেশ দিল দিল্লির আদালত। শুক্রবার দিশা রবির পুলিশ হেফাজত শেষ হওয়ার পরে তাকে দিল্লির পাতিয়ালা আদালতে পেশ করা হয়েছিল । সেখানেই বিচারক এই নির্দেশ দেন ।
কৃষক আন্দোলনের সপক্ষে গ্রেটা থুনবার্গকে ‘টুলকিট’ শেয়ার করার অভিযোগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দিশা রবিকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল । ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালত দিশা রবিকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতে প্রেরণ করে। পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজত শেষ হয় শুক্রবার। তাই দিশাকে এদিন ফের আদালতে তোলা হয়। অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটন বিচারক আকাশ জৈন দিশাকে এ বার তিন দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, মুম্বই হাইকোর্টে রায়ে অন্য দুই সমাজকর্মী নিকিতা জ্যাকব ও শান্তনু মুলুকের গ্রেফতারি পরোয়ানা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। টুলকিটে বিতর্কে দিশার সঙ্গে এই দুজনেরও নাম জড়িয়েছিল। সূত্রের খবর, ২৫ হাজার টাকা বন্ডে সমাজকর্মী ও আইনজীবী নিকিতাকে শর্তসাপেক্ষ জামিন দিয়েছে আদালত।
পুলিশ এদিন আদালতে জানিয়েছে, দিশা ও বাকি দুই অভিযুক্ত, আইনজীবী নিকিতা জেকব এবং শান্তনু মুলুক নামে ওই ইঞ্জিনিয়ারকে মুখোমুখি বসিয়ে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি জেরা করতে চায় তারা।
অভিযোগ, বিশ্বজুড়ে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানানো হয়েছিল ওই টুলকিটের মাধ্যমেই। এর পরেই বেঙ্গালুরু থেকে ২১ বছরের সমাজকর্মী দিশাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধদমন শাখা। তদন্তকারীদের দাবি ছিল, ভারতে ওই টুলকিটের পরিচালনা করছিলেন দিশা। নেট মাধ্যমে ওই টুলকিটের মাধ্যমেই কৃষক আন্দোলনের প্রচার চালাচ্ছিলেন।দিশার পরেই নাম জড়ায় আইনজীবী তথা সমাজকর্মী নিকিতা জ্যাকবের। দিশার সঙ্গেই টুলকিটে কৃষক আন্দোলনের প্রচার করছিলেন নিকিতা, এমন অভিযোগ আনে দিল্লি পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা আনা হয়। টুলকিট শেয়ার করার ‘অপরাধে’এফআইআর দায়ের করা হয় আরও এক সমাজকর্মী শান্তনু মুলুকের বিরুদ্ধেও। পুলিশ জানাচ্ছে, এই তিনজনই একসঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন জুম কলে তাঁদের কথা হয়েছিল। নিজেদের মধ্যে তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বলেও দাবি পুলিশের। পুলিশের আরও অভিযোগ, ওই টুলকিট তৈরির পিছনে খলিস্তানি আন্দোলনের সমর্থনকারীদের হাত রয়েছে। আর এই টুলকিট সম্পাদনা করে খালিস্তানপন্থীদের সমর্থন করেছেন দিশা ও বাকি অভিযুক্তরা। পুলিশের দাবি, দিশা, নিকিতা ও শান্তনুদের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করা।