সাংবিধানিক আইন মেনে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি ছিল বিজেপির : মুখপাত্র

আগরতলা, ২৮ জানুয়ারি (হি.স.)৷৷ সাংবিধানিক আইন মেনে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রাক্তন বিজেপি প্রদেশ সভাপতি৷ এমন-কি, নেডা-র আহ্বায়ক তথা অসমের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও আইনের এক্তিয়ারে থেকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ অথচ, আন্দোলনকারী চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা আবারও বেআইনিভাবেই তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছেন৷ আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদেশ বিজেপির মুখ্য মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী আন্দোলনকারী চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সমস্ত অভিযোগের খণ্ডন করেছেন৷ তাঁর সাফ কথা, আন্দোলনের নামে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের একটা ছোট অংশ উত্তেজনার বারুদ ছড়ানোর কাজ সুপরিকল্পিতভাবে করছেন৷ কারণ, সিপিএমের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন৷


এদিন তিনি বলেন, ৫১ দিন ধরে আগরতলায় সিটি সেন্টারের সামনে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন ছিল না৷ ওই আন্দোলন সিপিএম দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল৷ কারণ, আন্দোলনের নামে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের একটা ছোট অংশ উত্তেজনার বারুদ ছড়ানোর কাজ সুপরিকল্পিতভাবে করছেন৷ তাঁরা সিপিএমের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছেন৷ তাঁর দাবি, সিপিএম বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে৷ কারণ, তাঁদের ভুল নীতির জন্যই ১০৩২৩ জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন৷

সুব্রতবাবুর কথায়, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তদানীন্তন বিজেপি প্রদেশ সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, সাংবিধানিক আইন মেনে ১০৩২৩ চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে৷ সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনও কাজ করবেন না৷ সাথে তিনি যোগ করেন, নেডা-র আহ্বায়ক তথা অসমের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও আশ্বাস দিয়েছিলেন, আইনের এক্তিয়ারে থেকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের সহায়তা করা হবে৷ সেই প্রতিশ্রুতির এক চুল নড়েনি বর্তমান বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার, জোর গলায় দাবি সুব্রত চক্রবর্তীর৷


তিনি বলেন, চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা চাইছেন কোনও পরীক্ষা ছাড়াই তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হোক৷ অথচ, সেই পথে হেঁটে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হলে আবারও বেআইনি কাজ করবে ত্রিপুরা সরকার, তা তাঁরাও যথেষ্ঠ বুঝতে পারছেন৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরা সরকার চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিবেচনা করে অশিক্ষক পদে নিয়োগ শুরু করেছে৷ তবে, এখন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া মেনে চলবে ত্রিপুরা সরকার৷ তাতে তাঁদের কীসের আপত্তি বোঝা বড় দায়, কটাক্ষ করে বলেন তিনি৷

এদিন প্রদেশ বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, শিক্ষকের চরিত্রের সাথে আন্দোলনকারীদের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ কারণ, তাঁরা উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন৷ সুর ছড়িয়ে তিনি বলেন, মশাল মিছিলের নামে হুঙ্কার শিক্ষকের ভাষা হতে পারে না৷ তাঁদের দেখে সিপিএমের ক্যাডার ছাড়া অন্য কিছুই মনে হচ্ছে না, কটাক্ষ করে বলেন তিনি৷ নবেন্দুর দাবি, দিল্লির কৃষক আন্দোলনের সাথে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলনের কোনও ফারাক নেই৷ এমন-কি, বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের তর্জমা করে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনিও উস্কানি দিচ্ছেন৷ নবেন্দু বলেন, আজকের এই পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী তদন্ত হচ্ছে৷ সেই ভয়েই চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের একাংশকে প্ররোচনার ফাঁদে ফেলেছেন৷ নিজেদের বাঁচাতে তাঁদের ব্যবহার করছেন, তোপ দাগেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *