তেলিয়ামুড়া (আগরতলা), ২৯ জানুয়ারি (হি.স.) : বন্যহাতির হামলায় পঞ্চাশোর্ধ জনজাতি মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় জনগণ আজ শুক্রবার মৃতদেহ নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছেন। খিলিংতি দেববর্মার মৃতদেহ নিয়ে আজ দুপুর দেড়টা নাগাদ চাকমাঘাট এলাকায় অসম-আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনায় উভয় দিকে প্রচুর যানবাহন আটক পড়েছে। অবরোধকারীরা মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা এককালীন আর্থিক সহায়তা, পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি এবং হাতির বিচরণ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল বন্যহাতির আক্রমণে প্রাণ গিয়েছে পঞ্চাশোর্ধ মহিলা খিলিংতি দেববর্মার। ওই ঘটনায় খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া মহকুমায় কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন উত্তর মহারানিপুর এলাকায় জনমনে আতঙ্ক ও ক্ষোভ উভয়ই দেখা দিয়েছে। খিলিংতি দেববর্মার মৃতদেহ গতকাল সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিল। আজ ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে চারটা নাগাদ উত্তর মহারানিপুর এলাকা থেকে একটি টিআর ০১ বি ৪১৬১ নম্বরের যাত্রীবাহী গাড়ি তেলিয়ামুড়ার দিকে যাচ্ছিল। উত্তর মহারাণীপুর এসপিও ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ একটি বন্য হাতি গাড়ির সামনে পড়ে তাণ্ডব শুরু করে। হাতির তাণ্ডব দেখে গাড়ির যাত্রীরা আত্মরক্ষায় পালিয়ে যান। কিন্তু, খিলিংতি দেববর্মা গাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বন্য হাতি খিলিংতি দেববর্মাকে সুর দিয়ে আঘাত করে। তাতে তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বন্যহাতির উন্মত্ত তাণ্ডবে ঘটনাস্থলে মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় কৃষ্ণপুর এলাকায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যদিও তেলিয়ামুড়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় কৃষ্ণপুর, উত্তর মহারানিপুর, কপালিটিলা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রায়শই বন্যহাতি উন্মত্ত তাণ্ডব চালায়। ধ্বংস করে দেয় ঘরবাড়ি, কৃষিক্ষেত। বন্যহাতির তাণ্ডব থেকে জন নিরাপত্তায় ব্যর্থ প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনগণ। আজ মৃতদেহ নিয়ে জাতীয় সড়কে অবরোধে বসে পড়েন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনগণ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর চাকমাঘাট এলাকায় মৃত খিলিংতি দেববর্মার নিথর দেহ ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় আসতেই জনগণ উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে মৃতদেহটি জাতীয় সড়কে নিয়ে এসে অবরোধ করেন।
খবর পেয়ে মহকুমা বন আধিকারিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু অবরোধকারীরা সাফ জানিয়ে দেন, দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়া গেলেই জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত করা হবে। সেই মতো দাবি পূরণের আশ্বাস দেন মহকুমা বন আধিকারিক। এরপরই জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত হয়েছে।