নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ জানুয়ারি৷৷ মাতৃ ভাষাকে ভিত্তি করেই উন্নত হয় জাতি৷ মাতৃ ভাষা যদি হারিয়ে যায় তাহলে কোনদিন জাতি সমৃদ্ধ হতে পারেনা৷ আজ লেফুঙ্গা ব্লকের শচীন্দ্র দেববর্মণ ম্যামোরিয়্যাল হলে মোহনপুর মহকুমা ভিত্তিক ৪৩ তম ককবরক ভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ একথা বলেন৷ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এক বর্ণাঢ্য র্যালী লেফুঙ্গা বাজারের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে৷ অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ১৯৭৯ সালের ১৯শে জানুয়ারি রাজ্যে ককবরক ভাষা সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়৷
আমাদের রাজ্যে ৮ লক্ষের উপর মানুষের মাতৃভাযা ককবরক৷ ককবরকে সর্বপ্রথম উপন্যাস লেখেন সুুধন্বা দেববর্মা৷ বর্তমানে ককবরক ভাষায় কবিতা, গান, ছড়া, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ রচিত হচ্ছে৷ সুুধন্বা দেববর্মা, শ্যামলাল দেববর্মা, নগেন্দ্র জমাতিয়া, নন্দকুমার দেববর্মা, চন্দ্রকান্ত মুড়াসিং, নরেশ চন্দ্র দেববর্মা, হরিপদ দেববর্মা, অতুল দেববর্মা এদের লেখনীর মাধ্যমে ককবরক ভাষা সমৃদ্ধ হয়েছে৷ তাছাড়াও শান্তিময় চক্রবর্তী, কুমুদকুণ্ড চৌধুরী, নিতাই আচার্য, স্নেহময় রায় চৌধুরী, মনোর’ন মজমদার, প্রভাস চন্দ্র ধর ককবরক ভাষার বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন৷
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলা ভাষীরাও ককবরক ভাষা নিয়ে চর্চা করছেন৷ সরকার রাজ্যে ভাষানীতি রূপায়ণের কথাও চিন্তাভাবনা করছে৷ এরফলে রাজ্যের ছোট ছোট জাতিগোষ্ঠির ভাষাগুলি উপকৃত হবে৷ গত আড়াই বছরে রাজ্যে ক্লাস এইট পর্যন্ত ৪৫টি সুকলে, ৫৯টি হাইসুকলে ও ২২টি হায়ার সেকেণ্ডারী সুকলে পাঠ্যক্রমে ককবরক ভাষা চালু করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ককবরক ভাষায় পি এইচ ডি কোর্স চালু করা হয়েছে৷ বর্তমানে ককবরক ভাষায় টেট পরীক্ষাও দেওয়া যায়৷
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক তরুণ দেববর্মা ও অধ্যাপক মনি দেববর্মা৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী রি’ত দেববর্মা, পদ্ম দেববর্মা, প্রদীপ দেববর্মা৷ স্বাগত ভাষণ রাখেন ডিসিএম মাণিক চাকমা৷ সভাপতিত্ব করেন লেফুঙ্গা বিএসি চেয়ারম্যান প্রণজিৎ দেববর্মা৷ অনুষ্ঠান শেষে অতিথিগণ দুস্থদের মধ্যে ৫০টি কম্বল বিতরণ করেন এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে সুকল ব্যাগ দেওয়া হয়৷