শিলচর (অসম), ২৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : মণিপুরের জিরিবামে বাঙালিদের অস্তিত্ব সাফ করতে বিভিন্ন স্থানের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে আমরা বাঙালী। আমরা বাঙালী-র অসম প্রদেশ সচিব সাধন পুরকায়স্থ এ সম্পর্কে বলেন, প্রতিবেশী রাজ্য মণিপুরের জিরিবাম জেলার ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থানের নাম পরিবর্তনের সরকারি তোড়জোড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। মণিপুর সরকারের এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে ‘আমরা বাঙালী’।
সাধন পুরকায়স্থ ক্ষোভ ব্যক্ত করে জানান, গত ২৩ ডিসেম্বর জিরিবামের জেলাশাসক কার্যালয়ে স্থানীয় বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন সহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সভায় জিরিবামের বিভিন্নস্থানের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বিস্তর আলোচনা হয়। জিরিবাম জেলা শহর কালিনগর যেখানে কালীমন্দির অত্যন্ত প্রাচীন। এছাড়া, বাবুপাড়া ছাড়াও বাঙালি অধ্যুষিত বহুস্থান বাঙালির অস্তিত্ব বহন করে আসছে। কিন্তু বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী সেই স্থানগুলোর নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে বাঙালি জনগণের চিরাচরিত মর্যাদাহানির চক্রান্ত চলছে। এভাবে মণিপুরের জিরিবামে বিদ্যমান বাঙালি নিদর্শনকে অস্বীকার করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন আমরা বাঙালীর অসম প্রদেশ সচিব সাধন পুরকায়স্থ।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে জাকুরাডহর থেকে যেভাবে বাঙালিদের উৎখাত করা হয়েছিল, সেভাবে ফের বাঙালি জনগণকে উৎখাতের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, জিপি উপত্যকায় ১৮৩৩ সালে ইয়ান্ডাবু চুক্তি অনুসারে জিরিবাম মণিপুরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তার আগে জিরিবাম কাছাড়ি রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেই সঙ্গে ওইসব অঞ্চলে বাঙালিদের বসবাস ছিল বলে জানান তিনি। বিভিন্ন স্থানের নামের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করলে বাঙালি জনগণের অভূতপূর্ব প্রমাণের যথার্থ নিদর্শন পাওয়া যায়। এই সব বিষয় তুলে মণিপুরের জিরিবাম জেলার বিভিন্ন স্থানের নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করার জোরালো দাবি জানিয়েছেন সাধন পুরকায়স্থ। এছাড়া জিরিবামে বসবাসকারী অসংখ্য বাঙালি জনগণের আধারকার্ড ও স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র তৈরি এবং ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তিতে জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়রান হতে হচ্ছে বাঙালিদের। মণিপুর সরকারের বাঙালি বিদ্বেষী আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শীঘ্রই তা বন্ধ করে বাঙালি অধিকার সুরক্ষিত করার দাবি জানিয়েছেন সাধন পুরকায়স্থ।