BRAKING NEWS

কাশ্মীরে শহিদ বিএসএফ জওয়ানের শেষকৃত্য সম্পন্ন, মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার ঘোষণা

আগরতলা, ১০ নভেম্বর (হি.স.)৷৷ কাশ্মীরে জঙ্গি মোকাবিলায় শহিদ বীর জওয়ান সুদীপ সরকারের নিথর দেহ আজ আগরতলায় আনা হয়েছে৷ পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তাঁর ধলেশ্বরস্থিত বাসভবনে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন৷ এদিন অশ্রুসজল নয়নে তাঁকে রাজ্যবাসী বিদায় জানিয়েছেন৷ বটতলা মহাশ্মশানে বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে গান স্যালুট দেওয়া হয়েছে৷ বীর জওয়ানের অন্তিম যাত্রায় বহু মানুষ শামিল হয়েছিলেন৷ তা দেখে গর্বে বুক ভরে গেছে তাঁর জন্মদাত্রী মায়ের৷ তিনি বলেন, সন্তান হারিয়েছি ঠিকই, কিন্তু দেশের জন্য তাঁর সন্তানের বলিদানে তিনি গর্বিত৷


ত্রিপুরার বীর সন্তান বিএসএফ জওয়ান সুদীপ সরকার কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে গিয়ে শহিদ হয়েছেন৷ কাশ্মীরের কুপওয়ারা সেক্টরের মাছিল সেক্টরে সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় শহিদ হয়েছেন তিনি৷ বিএসএফ জানিয়েছে, ৮ নভেম্বর ভোররাতে মাছিল সেক্টর এলাকা দিয়ে সন্ত্রাসবাদীরা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল৷ বিএসএফ তাদের আটকানোর চেষ্টা করে৷ তাতে একজন সন্ত্রাসবাদীকে খতম করতে সক্ষম হন বিএসএফ জওয়ানরা৷ কিন্তু বাকিরা এ-পাড়ে ঢুকে পড়ে৷ কনস্টেবল সুদীপ সরকার তাদের আটকাতে কড়া মোকাবিলা করেন৷ কিন্তু সন্ত্রাসবাদীদের অতর্কিত আক্রমণে তিনি গুরুতর আহত হন এবং প্রাণ হারান৷


বিএসএফ-এর কনস্টেবল সুদীপ সরকারের বড় ভাই দীপঙ্কর সরকার জানিয়েছেন, বিএসএফ আধিকারিকরা তাঁদের বাড়িতে ফোন করে এই দুঃসংবাদ দিয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, সম্প্রতি পঞ্জাব থেকে শ্রীনগর বদলি হয়েছিলেন তাঁর ছোট ভাই৷ বীরগতি প্রাপ্ত হওয়ার আগে এক সন্ত্রাসবাদীকে তিনি ধরাশায়ী করতে সক্ষম হয়েছিলেন৷ তিনি জানান, তাঁর ছোট ভাইয়ের দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে৷ স্বামীকে হারিয়ে তাঁর স্ত্রী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন৷


আজ দুপুরে আগরতলায় এমবিবি বিমানবন্দরে কফিনবন্দি হয়ে এসে পৌছায় শহিদের নিথর দেহ৷ বিমান থেকে নামিয়ে সহকর্মীর মরদেহ কাঁধে করে নিয়ে আসেন বিএসএফ জওয়ানরা৷ বিমানবন্দরের বাইরে অস্থায়ী বেদিতে তাঁকে বিএসএফ-এর পদস্থ আধিকারিকগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ এদিকে, বিমানবন্দরে প্রচুর বিজেপি যুব মোর্চার কর্মী হাজির হয়েছিলেন৷ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনবন্দি শহিদ বীর জওয়ানের মরদেহ বাইক মিছিল করে ধলেশ্বরে তাঁর বাসভবনে নিয়ে যান যুব মোর্চার কর্মীরা৷


অন্যদিকে, এলাকার মানুষ আগে থেকেই শহিদ জওয়ানের বাড়ির সামনে সমবেত হন৷ বীর সন্তানকে শেষবারের জন্য দেখতে এদিন মানুষের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ তাঁর মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সহ প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ, বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি অধ্যাপক ড় মানিক সাহা, বিজেপি প্রদেশ সাধারণ সম্পাদিকা পাপিয়া দত্ত তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন৷


মুখ্যমন্ত্রী এদিন সুদীপ সরকারের বীরগতি প্রাপ্তিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ সাথে তাঁর পরিবার পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন তিনি৷ এদিন তিনি ঘোষণা করেন, মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে বীর শহিদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে৷ এছাড়া তাঁর দুই কন্যা সন্তানের ভবিষ্যত গড়ে তোলার বিষয়েও ত্রিপুরা সরকার উদ্যোগ নেবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ত্রিপুরার বীর সন্তান সুদীপ সরকার শহিদ হয়েছেন৷ তাঁর এই অবদানে ত্রিপুরার পাশাপাশি সমগ্র দেশবাসী গর্বিত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *