গুয়াহাটি, ৫ অক্টোবর (হি.স.) : কেন্দ্ৰীয় সরকার বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে বেসরকারীকরণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার বিরুদ্ধে আজ (সোমবার) গোটা দেশে বিভাগীয় কর্মচারীরা প্ৰতিবাদ দিবস পালন করেছেন। বিদ্যুৎ কর্মচারী মহাসংঘ, জাতীয় বিদ্যুৎ ইঞ্জিনিয়ার এবং বিদ্যুৎ কর্মচারীর সমন্বয় রক্ষী সমিতির যৌথ আহ্বানে সারা দেশের পাশাপাশি গুয়াহাটি সহ অসমের বিভিন্ন প্রান্তেও প্ৰতিবাদ দিবস পালন করেছেন বিভাগীয় কর্মচারীরা।
অসম বিদ্যুৎ উৎপাদন নিগম এবং অসম বিদ্যুৎ সার্কুলেশন কার্যালয়গুলোর সামনে অতিমারি কোভিড-১৯-এর সমস্ত প্ৰটোকল মেনে ২ ঘণ্টা প্ৰতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন অসম স্টেট পাওয়ার ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন-এর সদস্যরা। এক প্ৰেস বিবৃতির মাধ্যমে অসম রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের উত্তরসূরী তিনটি কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে তীব্ৰ সমালোচনা করেছেন ইউনিয়নের সভাপতি ব্ৰজেন বরি, কার্যনির্বাহী সভাপতি লীলা সাংমা এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত কর। তাঁদের অভিযোগ, অদক্ষ পরিচালনা এবং দুর্নীতিপরায়ণ অফিসারদের জন্যই আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের তীব্ৰ সমালোচনা করে বিবৃতিটিতে তাঁরা আরও বলেছেন, সাধারণ মানুষের ওপর যেনতেনপ্ৰকারেণ চাপ সৃষ্টি করে, সরকারি কর্মচারীদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলাই হচ্ছে মোদী সরকারের ‘অচ্ছে দিন’-এর নমুনা।
বিদ্যুৎ কর্মচারীদের পদোন্নতি সমেত তৃতীয়, চতুর্থ শ্ৰেণির কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করা, সব ক্লারিক্যাল কর্মচারীর চাকরি একই ধরনের না করা (ওয়ান টায়ার) ইত্যাদি দাবি দাওয়ার ভিত্তিতে তাঁরা আজ প্রতিবাদী ধরনা কর্মসূচি পালন করেছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীদের অভিযোগ, কেন্দ্ৰীয় সরকার সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে ব্যক্তিগতকরণ করে সাধারণ গ্ৰাহকদের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে। বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসার, কর্মচারীদের বেতন, পেনশন, গ্ৰ্যাচুইটির সমস্ত দায়িত্ব সরকার এড়িয়ে যেতে চাইছে। এতে বিভাগীয় কর্মচারীদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কারবি লাংপি জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য ইউনিয়নের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন।
ইউনিয়নের নেতারা অসম সরকারের তীব্ৰ সমালোচনা করে বলেন, জিষ্ণু বরুয়া চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময় কঠোক পরিশ্ৰম এবং সুষ্ঠু প্ৰশাসনের মাধ্যমে অসম বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির তিনটিতেই উন্নয়ন হয়েছিল। লোকসানের পরিমাণ কমাতে পেরেছিলেন তিনি। বিদ্যুৎ কর্মাচারীদের সমস্যাবলিও তিনি বুঝতেন। তাঁর মতো একজন যোগ্য ভূমিপুত্ৰকে উদ্দেশ্য প্ৰণোদিতভাবে চেয়ারম্যানের পদ থেকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে অসম বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো অযোগ্য আধিকারিকের হাতে গিয়ে পড়ে এবং লোকসানের মুখোমুখি হয়। কেন্দ্ৰীয় সরকার বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে বসেরকারীকরণের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে অদূর ভবিষ্যতে অসম স্টেট পাওয়ার ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন আরও বড় আন্দোলনে নামবে বলে হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।