করোনার প্রকোপ, রাজ্যে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান শুরু

আগরতলা, ২০ আগস্ট (হি.স.)৷৷ ত্রিপুরায় শুরু হল নেইবারহুড ক্লাস৷ অর্থাৎ খোলা আকাশের নীচে পঠন-পাঠন৷ করোনা পরিস্থিতিতে ছয় মাস ধরে বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন বন্ধ ছিল৷ তাই খোলা আকাশের নীচে ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে সবর্োচ্চ পাঁচজন ছাত্রছাত্রীকে পড়াচ্ছেন শিক্ষকরা৷
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ থেকে ত্রিপুরায় করোনা-র প্রকোপে সুকলে পঠন-পাঠন বন্ধ রয়েছে৷ তাই ধাপে ধাপে ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠনের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এক ফেসবুক বার্তায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব জুড়ে করোনা অতিমারির প্রকোপে আজ শিক্ষা ব্যাবস্থা মহা সঙ্কটে৷ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা৷

কিন্তু এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়েও রাজ্য শিক্ষা দফতর তাদের দায়বদ্ধতা ভুলেনি৷ তিনি বলেন, বিগত ছয় মাস ধরে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে এর জন্য রাজ্য শিক্ষা দফতর প্রথমে রেকর্ডেড ক্লাস ও পরে অনলাইন লাইভ ক্লাসের ব্যাবস্থা করেছে৷ ছাত্রছাত্রীরা পরবর্তী সময়েও দেখতে পারে, তাই ওই সব ক্লাস ’’শিক্ষাবন্ধু’’ নামের ইউটিউব চ্যানেল নিয়মিত আপলোড করা হয়েছে৷ এ ছাড়া চলেছে ’’একটু খেলো একটু পড়ো’’র মতো অভিনব আয়োজন৷ এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য ’’কল সেন্টার’’ খোলা হয়েছে৷ এই কল সেন্টারে ছাত্রছাত্রীরা তাদের বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ণ বা অসুবিধা যেমন দন্ঠর করতে পারবে ঠিক তেমনি কাউন্সেলিঙের সুবিধাও নিতে পারবে৷
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, আজ থেকে অন্যান্য রাজ্যের মতো রাজ্য শিক্ষা দফতরের উদ্যোগেও শুরু হয়েছে নেইবারহুড ক্লাস৷ যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ক্লাসের সুবিধা নিতে পারছে না এদের জন্য খোলা ময়দানে শিক্ষক শিক্ষিকারা সবর্োচ্চ পাঁচজন করে ছাত্র নিয়ে শুরু করেছেন পাঠদান৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে পাঠ্যক্রমকেও কিছুটা সংকুচিত করা হয়েছে যাতে এদের ওপর বাড়তি বোঝা না পড়ে৷


নেইবারহুড ক্লাস-এ তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একজন শিক্ষক সবর্োচ পাঁচজন ছাত্রছাত্রীকে পড়াবেন৷ সপ্তাহে দশ ঘণ্টা পড়াতে হবে তাঁদের৷ পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে ওই ক্লাস শুরু হবে৷ একই পদ্ধতি পরবর্তী ধাপেও শুরু হবে৷ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের সপ্তাহে ১২ ঘণ্টা এবং নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা পড়াবেন শিক্ষকরা৷ এক্ষেত্রে পাঠ্যক্রমের বিজ্ঞান ও গণিত ৬০ শতাংশ এবং বাংলা, ইংরেজি, এসএসটি এবং এনভায়রনমেন্ট বিষয়ে ৫০ শতাংশ পড়াবেন৷ ত্রিপুরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের খবর পেয়ে ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র, সিকিম, মণিপুরে খোলা আকাশের নীচে ক্লাসরুম শুরু হয়েছে৷