করোনায় আরও দুই নাগরিকের মৃত্যু, একজন রাজ্যে, অন্যজন তামিলনাড়ুতে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ জুলাই৷৷ রাজ্যের আরও দুই নাগরিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন৷ তাঁদের একজন ত্রিপুরায়, অন্যজন সদূর তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরে৷ এখন পর্যন্ত রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এদিকে রাজ্যে নতুন করে ২৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করে এই কথা জানিয়েছেন৷ তিনি জানান, এদিন ৫১৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ তাতে, ২৫৪ জনের কোভিড -১৯ রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে৷ এই ২৫৪ জনের মধ্যে বিমানযাত্রী রয়েছেন ২২জন, সংক্রমিতের সংস্পর্শে ২১জন, কন্টেইনমেন্ট জোনের ৩ জন, উপসর্গ নিয়ে ২৫ জন, বিভিন্ন জায়গা ভ্রমন করে আসা ১৮ জন এবং এন্টিজেন স্টেটে ১৬৫জন৷


জেলা ভিত্তিক হিসেবে দেখা গিয়েছে পশ্চিম জেলায় ৬৫জন, উত্তর জেলায় ৪৮জন, গোমতী জেলায় ৩৬জন, ধলাই জেলায় ৩৩ জন, দক্ষিণ জেলায় ২৯ জন, সিপাহীজলায় ২৮ জন, খোয়াই জেলায় ১২ জন এবং উনকোটি জেলায় ৩ জন করোনা আক্রান্ত৷ মুখ্যমন্ত্রী আরোও জানান দুর্ভাগ্যবশত রাজ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে৷ অন্যদিকে, জেলা স্তরে কোভিড কেয়ার সেন্টার থেকে এদিন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮১ জন৷
প্রসঙ্গত, করোনা-র প্রকোপ ক্রমশ তেজি হচ্ছে৷ ইতিপূর্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছিল৷ এখন মৃত্যু মিছিলও শুরু হয়েছে৷ ফলে ত্রিপুরাবাসীর সাথে ত্রিপুরা সরকারও ভীষণ চিন্তায় রয়েছে৷


মঙ্গলবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৫৫ বছর বয়সি জনৈক মহিলার মৃত্যু হয়েছে৷ স্বাস্থ্যসচিব তথা অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এস কে রাকেশ এই তথ্য দিয়েছেন৷ তবে, ওই করোনা আক্রান্তের সম্পর্কে অন্য কোনও তথ্য জানা সম্ভব হয়নি৷
এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ত্রিপুরার এক নাগরিকের তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরে মৃত্যু হয়েছে৷ কমলপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, তিনি প্রায় ১৫ বছর ধরে কর্মসূত্রে কোয়েম্বাটুরে বসবাস করছিলেন৷ তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন৷ স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান নিয়ে তিনি সেখানে থাকেন৷ তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর৷

তাঁর পরিবারের জনৈক সদস্য জানিয়েছেন, দুদিন আগেই তাঁর কোভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল৷ আজ সকাল সাড়ে নয়টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে৷ তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং মধুমেহ রোগে ভুগছিলেন৷ তাঁর পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন, আজ স্ত্রী ও ছেলের নমুনা সংগ্রহ করে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে৷
এদিকে, করোনা-র প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে ত্রিপুরায় বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিং হোমগুলিতেও রোগী ভরতির ক্ষেত্রে রেপিড অ্যান্টিজেন ডিটেকশন কিট দিয়ে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ এক্ষেত্রে, প্রতি কিটের জন্য সাড়ে চারশো টাকা জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কোষাগারে জমা দিতে হবে৷ এ-বিষয়ে পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দফতরের অধিকর্তা ডা. রাধা দেববর্মা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন৷
প্রসঙ্গত, করোনা ত্রিপুরায় ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে৷ আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে৷ ফলে, ত্রিপুরা সরকার সমস্ত জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে৷ অন্য কোনও রোগে আক্রান্ত রোগী অ্যান্টিজেন টেস্টে রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেই তাকে ভরতি রাখা হবে৷ স্বাভাবিকভাবে, একই পদ্ধতি বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিং হোমগুলির উপর কার্যকরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷


মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দফতরের অধিকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন, ত্রিপুরায় সমস্ত নার্সিং হোম এবং বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভরতির ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন টেস্ট করতেই হবে৷ সে-ক্ষেত্রে প্রতি কিটের জন্য সাড়ে চারশো টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কোষাগারে জমা দিতে হবে৷ কিট সংগ্রহের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের সাথেই যোগাযোগ করতে হবে৷ পাশাপাশি টেস্টের ফলাফল আইসিএমআর-এর পোর্টালে দাখিল করতে হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *