নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ জুলাই৷৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসকের এক আদেশে আগরতলা পুর নিগম এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের একতা সংঘ পাড়া কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করেছেন৷ কনটেইনমেন্ট জোনের এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকা বাফার জোন ঘোষণা করা হয়েছে৷ কনটেইনমেন্ট জোন এলাকায় ২০০ বাড়িতে ৭২২ জন রয়েছেন৷ পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে৷ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলাশাসকের আদেশে জানানো হয়েছে৷
জিরানীয়া মহকুমার মান্দাই আর ডি ব্লকের লক্ষীপুর ভিলেজ কমিটির আর কে নগর টি এস আর দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ান শিবির গ্রীণ জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক এক বি’প্তিতে এই ঘোষণা দিয়েছেন৷ কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এই এলাকাকে আগে কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছিল৷ সংক্রমণ না থাকায় নিয়ম মেনে পরবর্তী সময়ে অরে’ জোন এবং গ্রীণ জোন ঘোষণা করা হয়৷
এদিকে, কোভিড-১৯-র সংক্রমণ প্রতিরোধে ধলাই, গোমতী ও দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক এক আদেশে ভারতীয় ফৌজদারী দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা অনুযায়ী সমগ্র জেলায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন৷ এতে জেলায় রাত ৯টা থেকে পরেরদিন সকাল ৫টা পর্যন্ত সময়ে এবং ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার ২ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েতের উপর নিষেধা’া আরোপ করা হয়েছে৷ উক্ত সময়ে নৈশ কার্ফ চলাকালীন কেবলমাত্র বিভিন্ন সিফটে কাজ চলে এমন শিল্প ক্ষেত্র সমূহ, রাজ্য এবং জাতীয় সড়কে পণ্য ও লোক চলাচল, পণ্য লোডিং, আনলোডিং-র কাজ এবং বাস, ট্রেন, বিমানে করে যে সব যাত্রী গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে যাবেন তারাই ছাড় পাবেন৷ এই আদেশে আরও বলা হয়েছে সুুইমিং পুল, পার্ক, বিভিন্ন হল, অডিটোরিয়াম এবং এধরণের জায়গা ৩১ জলাই ২০২০ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে৷
সামাজিক, রাজনৈতিক, খেলাধূলা, বিনোদনমূলক, সাংস্ক’তিক, ধর্মীয় এবং অন্যান্য বড় জমায়েতমূলক অনুষ্ঠানের উপর নিষেধা’া আরোপ করা হয়েছে৷ জেলাশাসকের আগাম অনুমতি ছাড়া এধরণের জমায়েত করা যাবেনা৷ বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশী এবং শেষক’ত্যের অনুষ্ঠানে ২০ জনের বেশী জমায়েত করা যাবে না৷ এছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব যে সব কার্যবলীর উপর নিষেধা’া আরোপ করেছেন তাও এই সময়ে করা যাবেনা৷ ধলাই জেলায় ঘোষিত কনটেইনমেন্ট জোন এবং বাফার জোনে যে সব বিধিনিষেধ এর আগেই আরোপ করা হয়েছে তাও বলবৎ থাকবে৷ এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আই পি সি’র ১৮৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
কোভিড-১৯ (নোভেল করোনা ভাইরাস)-র সংক্রমণ প্রতিরোধে গোমতী জেলার জেলাশাসক ভারতীয় ফৌজদারী দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা অনুযায়ী সমগ্র গোমতী জেলায় জন জমায়েত এবং সভা সমাবেশ করার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন৷ এছাড়া ওই আদেশে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দুই কিলোমিটার এলাকা ছাড়া সমগ্র জেলায় রাত ৯টা থেকে পরেরদিন সকাল ৫টা পর্যন্ত সময়ে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কারুর ঘর থেকে বেরনোর উপর নিষেধা’া আরোপ করা হয়েছে৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ২ কিলোমিটার এলাকায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে কার্ফ জারি থাকবে৷
এই আদেশে আরও বলা হয়েছে সমস্ত জোনেই ৬৫ বছরের বেশী বয়সের ব্যক্তিগণ, যারা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, অন্ত:সত্বা মহিলারা এবং অনুর্ধ ১০ বছরের শিশুরা স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জরুরী কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন না৷ প্রত্যেকের মুখে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ জনবহুল এলাকায় এবং যানবাহনে সমাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে বজায় রাখতে হবে৷ জনবহুল এলাকায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ প্রকাশ্যে কেউ থুথু ফেললে তাকে জরিমানা করা হবে৷ প্রকাশ্যে মদ্যপান, গুটকা, পান, তামাক সেবন করা যাবেনা৷ উল্লিখিত নিষেধা’া ১১ জলাই ২০২০ থেকে কার্যকর হয়েছে এবং তা ৩১ জলাই ২০২০ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে৷ এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আই পি সি’র ১৮৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক ভারতীয় ফৌজদারী দণ্ডবিধি ১৯৭৩-র ১৪৪ ধারা অনুযায়ী সমগ্র জেলায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন৷ এতে জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ২ কিলোমিটার এলাকা ছাড়া অন্যত্র রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ৫টা পর্যন্ত সময়ে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ এই সময়ে অপ্রয়োজনীয় যে কোন কারণে মানুষের চলাচলের উপরও নিষেধা’া আরোপ করা হয়েছে৷ জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ২ কিলোমিটার এলাকায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরেরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ এই সময়েই অপ্রয়োজনীয় কারণে মানুষের চলাচলের উপরও নিষেধা’া আরোপ করা হয়েছে৷ এই আদেশে আরও বলা হয়েছে কনটেইনমেন্ট জোন অরে’ জোনে রূপান্তরিত হবার আগ পর্যন্ত শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা সেখানে বহাল থাকবে৷ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপর নিষেধা’া বহাল থাকবে৷ সমস্ত কাজের জায়গায় মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবের আদেশ অনুসারে যে সমস্ত ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে তাও বহাল থাকবে৷ এই নিষেধা’াগুলি ৩১ জলাই ২০২০ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে৷ এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আই পি সি’র ১৮৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷