শিলং, ৭ জুলাই (হি.স.) : বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে পা বাড়িয়েছে মেঘালয় সরকার। সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২০ সালের মধ্যে রাজ্যের মোট চাহিদার ৭৫ শতাংশ পূরণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা তাঁর অফিশালায় টুইটে এই তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, ছাদের উপরে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের সূচনা নিজের সরকারি বাসভবন দিয়েই শুরু করেছেন। তাঁর সরকারি আবাসের ছাদে সংস্থাপিত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র ইতিমধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে। বিদ্যুতের চাহিদাও মেটাচ্ছে। সাথে এক ভিডিও বার্তায় তিনি সাফ জানিয়েছেন, উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে পাঠানো হবে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট রাজ্য মেঘালয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ঘাটতি পূরণে উদ্যোগী হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন নদী, জলপ্রবাহ এবং পরিত্যক্ত লেক-এর জল ব্যবহার করে হাইড্রো-পাওয়ার প্রজেক্ট গড়ে তুলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে মেঘালয় সরকার। রাজ্যে মোট ১,৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু নিজস্ব উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৯৭০ মেগাওয়াট। ফলে, ৪২ শতাংশ বিদ্যুতের ঘাটতি বাইরে থেকে ক্রয় করে মেটাতে হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার চিন্তাধারা শুরু করেছে।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা ভিডিও বার্তায় বলেন, হাইড্রো-পাওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল উৎস। কিন্তু, অন্যান্য নবায়নযোগ্য শক্তিকে ব্যবহার করেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা উচিত হবে না। তাঁর কথায়, বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে সৌর বিদ্যুতের কোনও বিকল্প হয় না। সেক্ষেত্রে ছাদের ওপর সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প সংস্থাপন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি আবাসের ছাদে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র বসানো হয়েছে। তাতে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের সাথে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে পাঠানো যাচ্ছে।
তিনি বলেন, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ব্যবহার এবং উদ্বৃত্ত পরিমাণের সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর দাবি, শিলং শহরে ছাদে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে ২০০ মিলিয়ন ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের আশা করা যাচ্ছে। ভাড়া নেওয়ার স্কিমের সহায়তায় ওই প্রকল্পটি চালু করা হবে। তাতে ভোক্তারাও উপকৃত হবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আগামী অর্থবর্ষে ১২১টি সরকারি ভবনে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ভারত সরকার ইতিমধ্যে এই প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্ত সরকারি অফিস এবং সরকারি কলেজে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা সম্ভব হলে প্রত্যেক শনি, রবি এবং ছুটির দিনে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে পাঠানো সম্ভব হবে। তাতে ২০২০ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে।