নিজস্ব প্রতিনিধি, বিলোনীয়া, ৩ জুলাই৷৷ পিছলা গাছের গোটা কেড়ে নিল এক শিশুর প্রাণ৷ মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বিলোনিয়া আমজাদ নগর এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে৷ দেড় বছরের রেহান নামে এক ছোট্ট শিশু৷ বাড়ির উঠোনে খেলছিল৷ খেলতে খেলতে পরিবারের অজান্তেই বাড়ির উঠানে পড়ে থাকা পিছলা গাছের গোটা তুলে নিয়ে মুখের ভিতর ঢুকানোর পর গলায় আটকে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে উঠানের মধ্যে ছটফট করতে থাকে৷ রেহানের মা সহ বাড়ির অন্যান্য লোকজন দৌড়ে এসে দেখতে পায় রেহানের গলাতে একটা পিছলা গাছের গোটা আটকে আছে৷ সাথে সাথে বিলোনিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে৷
কিন্তু শিশুটির ময়নাতদন্ত করার বিষয় নিয়ে হাসপাতালে চত্তরে কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়৷ দেড় বছরের শিশুটিকে যাতে ময়নাতদন্ত করানো না হয় সেই বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিজিৎ বৈদ্যের কাছে দাবি করে পরিবারের পক্ষ থেকে৷ অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে ময়নাতদন্তের পর মৃত দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া সরকারি নিয়ম৷কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিজিৎ বৈদ্য সেই নিয়ম সম্পর্কে জানার পরেও মৃত শিশুর পরিবারের লোকদের হয়রানি করে বলে অভিযোগ৷ চিকিৎসক অভিজিৎ বৈদ্য মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক , বিলোনিয়া থানার ওসির কাছ থেকে মৃতদেহ ছাড়ার অনুমতি নিয়ে আসার জন্য বলে৷ সেই মোতাবেক পরিবারের লোকেরা সবার কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করে৷ কিন্তু সবার একই কথা কর্তব্যরত চিকিৎসক এই বিষয়ে জানে৷ আবারো পরিবারের লোকেরা কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিজিৎ বৈদ্যের কাছে যাওয়ার পর আমজাদ নগর এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানকে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য বলে৷ প্রধানও হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে অনুরোধ করে রেহানের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত না করে ছেড়ে দিতে৷ এরপরেও চিকিৎসক ময়নাতদন্ত ছাড়া যে মৃতদেহ দেওয়া যাবে না সেই কথা একবারের জন্য বলেনি৷ প্রায় ছয় ঘণ্টার নাটকের পর মহকূমা স্বাস্থ্য আধিকারিক ও পুলিশের উপস্থিতিতে মৃত শিশুটির পরিবারেকে জানিয়ে দেওয়া হয় ময়নাতদন্তের পর রেহানের মৃতদেহ দেওয়া হবে৷ এরপরেই চলে বাকবিতণ্ডা৷
পরিবারের লোকদের অভিযোগ চিকিৎসক অভিজিৎ বৈদ্য হয়রানি না করে সরাসরি বলে দিলে পারতো ময়নাতদন্তের পর রেহানের মৃতদেহ দেওয়া হবে৷
দেড় বছরের শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধিরা হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিজিৎ বৈদ্যের কাছে শিশুর মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে অসজৌন্যতার পাশাপাশি দুব্যবহার করে৷ এদিকে রোগীদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ উঠেছে এই চিকিৎসক নাকি রোগীদের সাথেও দুব্যবহার করে থাকে৷
শুক্রবার দুপুরে ময়নাতদন্তের পর রেহানের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ মৃতদেহ এলাকায় পৌছাতেই কান্নায় ভেংগে পরে পরিবারের লোকজন , আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী৷ নামাজ আদায়ের পর চোখের জলে মুসলিম সম্প্রদায় মতে কবর দেওয়া হয় ছোট্ট রেহানকে৷ ছোট্ট অবুঝ শিশু রেহানের অকাল প্রয়াণে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে৷
2020-07-04