নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি, ১৮ জুন৷৷ নেশা বিরোধী অভিযানে গিয়ে ছুরিকাহত হয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মী৷ নেশা কারবারিদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতরভাবে আহত গোয়েন্দা কর্মী জিএম উদ্দিনকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে৷ এদিকে, ঘটনার পর-পরই নেশা কারবারিরা পালাতে সক্ষম হয়েছে৷ তবে তারা দুই প্যাকেটে মোট ২৪ গ্রাম ব্রাউন সুগার ফেলে গেছে৷ পুলিশ ওই হেরোইন উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে৷
উত্তর ত্রিপুরার চোরাইবাড়ি থানাধীন লক্ষ্মীনগর ২ নম্বর ওয়ার্ডে সংগঠিত এই ঘটনার খবর পেয়ে উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ মহকুমা পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন৷ পুলিশ নেশা কারবারিদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে৷
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর ত্রিপুরা জেলার চোরাইবাড়ি থানাধীন লক্ষ্মীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ নম্বর ওয়ার্ডে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা পুলিশ, চোরাইবাড়ি থানার পুলিশ ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাজীব সূত্রধর নেশা বিরোধী অভিযানের নেমে ওৎ পেতে বসেছিলেন৷ বেলা আড়াইটা নাগাদ লক্ষ্মীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রেমতলা গৌরীপুর সড়কের ওপর ৪/৫ জন নেশা কারবারির এক দলকে আটক করেন গোয়েন্দা পুলিশের তিন কর্মী৷ তাদের তল্লাশি করে দুই প্যাকেট ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়৷ ওই সময় নেশা কারবারিরা গোয়েন্দা পুলিশের ওপর চড়াও হয়৷ গোয়েন্দা পুলিশ কর্মী সত্যেন্দ্র নাথ ও মহেন্দ্র নাথ তাদের কবল থেকে নিজেদের ছাড়িয়ে পালিয়ে যান৷ কিন্তু অপর গোয়েন্দা পুলিশ কর্মী জি এম উদ্দিনকে প্রচণ্ড মারধর করে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে জনৈক সুলেমান আলির বাড়িতে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে নেশাকারবারীরা৷ তার পেট ও পিঠে প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে৷
ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি আঘাতে গুরুতরভাবে আহত গোয়েন্দা পুলিশ কর্মী জিএম উদ্দিনের চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন৷ তখন নেশা কারবারিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়৷ ততক্ষণে ঘটনার খবর পেয়ে চোরাইবাড়ি থানার পুলিশ ও মহাকুমা পুলিশ আধিকারিক রাজীব সূত্রধর ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে গুরুতর ভাবে আহত গোয়েন্দা পুলিশ কর্মীকে কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন৷ কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক গোয়েন্দা পুলিশ কর্মী জিএম উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাঁকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন৷ চিকিৎসকের বক্তব্য, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পিঠের চারটি স্থানে ও পেটের নাভির উপরে বেশ গভীর ভাবে ঘায়েল হয়েছে৷
ঘটনার খবর পেয়ে উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেন্সিং ডার্লং বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ ঘটনাস্থল থেকে নেশা কারবারিদের পায়ের জুতো সহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ স্থানীয় জনগণ নেশা কারবারিদের মধ্যে সিহাব আলি, সুলেমান আলিকে শনাক্ত করেছেন৷ তবে, বাকি তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারেননি৷ চোরাইবাড়ি থানার পুলিশ একটি টিআর ০৫ এ ৬৪৮৩ নম্বরের বাইক উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে৷ পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট ধারায় চোরাইবাড়ি থানার পুলিশ একটি মামলা হাতে নিয়ে অভিযুক্তদের জালে তুলতে মাঠে নেমে পড়েছে৷
এদিন নেশা কারবারিরা পালিয়ে গেলেও ওদের কাছ থেকে দুই প্যাকেটে ২৪ গ্রাম ব্রাউন সুগার উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা৷