নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ মে৷৷ সোমবার মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের খুশির উৎসব ঈদ৷ টানা এক মাস রোজা পালনের পর মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ঈদ উৎসবে সামিল হচ্ছেন৷ তবে এবার ঈদ উৎসবে তেমন কোন লোক জমায়েত হচ্ছে না৷ মসজিদ গলিতে নামকাওয়াস্তে ঈদের নামাজ পাঠ করানো হবে৷ প্রত্যেকে নিজ নিজ বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করবেন৷
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে গোটা বিশ্ব বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে৷ গোটা ভারতবর্ষে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সারা দেশজুড়ে চলছে লক ডাউন৷ লকডাউন চলাকালে সমস্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও জামায়াত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ নামা জারি করেছে৷ সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না হলে করোনা গ্রাসে গোটা দেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ সে কারণেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা এ বছর ১ মাস রোজা পালনের পর ঈদ উৎসবে কোন ধরনের জমায়াতে শামিল হচ্ছে না৷ মুসলিম ধর্মগুরুরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার যে নির্দেশ নামা জারি করেছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে৷ মানুষকে বেঁচে থাকার তাগিদেই কেন্দ্রীয় সরকার এই ধরনের স্বাস্থ্যবিধি জারি করেছে৷ সে কারণেই এ বছর রোজা পালন করার পর ঈদ উৎসবে কোন ধরনের জমায়াত করা সম্ভব নয়৷
প্রতিটি মসজিদে পাঁচ থেকে ছয় জন মিলে ঈদের নামাজ আদায় করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ মুসলিম ধর্মাবলম্বী প্রত্যেককেই নিজ নিজ বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ মুসলিম ধর্ম গুরুরা নির্দেশ সর্বত্র পালন করার জন্য বলেছেন৷ প্রত্যেককেই নিজ নিজ বাড়িতে সীমিত সংখ্যক লোকজনদেরকে নিয়ে ঈদে আনন্দ উপভোগ করতে বলা হয়েছে৷ রাজধানী আগরতলা শহরের গেদুমিয়ার মসজিদের ইমাম বলেছেন ঈদ উৎসবে আনন্দ উল্লাস এর চেয়েও বড় হল মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা৷ মানুষ বেঁচে থাকলে পরবর্তী বছর ঈদের উৎসবে আনন্দ উল্লাসে সবাই মত্ত হওয়া যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷
এবছর সরকারি নির্দেশ মেনে সকলকে বাড়িঘরে ঈদের নামাজ আদায় করতে এবং সীমিত সংখ্যক লোকজনদের কে নিয়ে ঈদের আনন্দে দিন কাটাতে বলা হয়েছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে এ বছর রাজ্যের কোথাও কোন মসজিদে ঈদের নামাজ পাঠ কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের জমায়েত করা হবে না৷ সীমিত সংখ্যক লোকজনকে নিয়ে মসজিদে নিয়ম রক্ষার জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা হবে৷ ঈদ উৎসবে অন্যান্য বছরের মতন আলিঙ্গন না দেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে ঈদের বাজারেও এবছর তেমন কোনো ভির পরিলক্ষিত হচ্ছে না৷ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ঈদের বাজারে ক্রেতাদের কোন ভির নেই, যারা আসেন সামান্য কিছু জিনিসপত্র নিয়ে ঘরে ফিরছেন৷
এ বছর ঈদের বাজারে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া বলে জানান ব্যবসায়ীরা৷ জিনিসপত্রের আমদানি না থাকার কারণেই জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া বলেও ব্যবসায়ীদের অভিমত৷ এদিকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ ঈদ উৎসব উপলক্ষে রাজ্যের মুসলিম ধর্মাবলম্বী জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ তিনি প্রত্যেকের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা করেছেন৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং রাজ্যপাল সহ অন্যান্যরা ঈদ উৎসব উপলক্ষে মুসলিম ধর্মাবলম্বী সকল জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেছেন৷