বাগদাদ, ৩ জানুয়ারি (হি.স.): ইরাকের রাজধানী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বড়সড় ‘অভিযান’ চালাল আমেরিকা। বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন এয়ার স্ট্রাইকে মৃত্যু হয়েছে ইরান ও ইরাকের শীর্ষ কমান্ডার-সহ ৭ জনের। মৃত ৭ জনের মধ্যে রয়েছে ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের কাদ্স ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানি। প্রাণ হারিয়েছে ইরাকি জঙ্গি সংগঠন পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স-এর ডেপুটি কমান্ডার আবু মাহদি আল-মুহানদিসও।
এই এয়ার স্ট্রাইকের ফলে আমেরিকা এবং ইরাকি সরকারের মধ্যে সম্পর্ক আরও তলানিতে পৌঁছতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে, বাগদাদ বিমানবন্দরে এয়ার স্ট্রাইকের সাফল্যে উছ্বসিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এয়ার স্ট্রাইকের পরই নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে আমেরিকার পতাকা পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এয়ার স্ট্রাইক এবং কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর খবরে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে| পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার স্ট্রাইক চালানো হয়েছে। ভারতীয় সময় অনুযায়ী শুক্রবার সকালে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে, বিদেশে মার্কিন আধিকারিকদের সুরক্ষিত রাখার জন্য, ইরানের এলিট রেভলিউশনারি গার্ড ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়েছে| হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ইরাক এবং ওই অঞ্চলে আমেরিকান কূটনীতিক এবং সার্ভিস মেম্বারদের উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল জেনারেল কাসেম সোলেইমানির| মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এস্পার বলেছেন, ‘‘ইরান ও তার আশপাশের দেশগুলিতে থাকা মার্কিন কূটনীতিকদের রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ।’’
ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জারিফ এই মার্কিন হানাকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ’ বলে নিন্দা করেছেন। ‘আগামী দিনে আমেরিকাকে এর মূল্য দিতে হবে’ বলে তাঁর টুইটে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। যদিও ইরানের ঘোর বিরোধী বলে পরিচিত ইরাক সরকার এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি এই এয়ার স্ট্রাইকের প্রেক্ষিতে। সূত্রের খবর, মার্কিন সেনাবাহিনী এবং কূটনীতিকদের উপর হামলা করার পরিকল্পনা করছিল ইরানের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানি। এমতাবস্থায় বাগদাদ বিমানবন্দরে এসেছিল ‘হাই-প্রোফাইল’ অতিথিরা। গাড়িতে করে তাঁদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রকেট নিক্ষেপ করে ওই গাড়ি দু’টিই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, শুক্রবার ভোররাতে ওই বিমান হানা চালানো হয় বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ওই সময় বিমানবন্দরের কাছে দু’টি গাড়ির কনভয়ের একটিতে ছিলেন সোলেইমানি ও আবু মাহদি আল-মুহানদিসও। অন্য গাড়িটিতে ছিল তাঁদের সঙ্গীরা। বিমান থেকে ফেলা বোমায় একটি গাড়ি পুড়ে যায়। সেই জায়গাটায় ছিল ছাইয়ের স্তুপ। সেই ছাইয়ের নীচেই দেখা যায় সোলেমানির রক্তাক্ত দেহ। তাঁর হাত। আঙুলে ছিল সেই লাল আংটি, যা এর আগেও সোলেইমানির বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে। এই এয়ার স্ট্রাইকে ইরাকের মানুষ খুব খুশি, জানিয়ে একটি ভিডিয়ো-সহ টুইট করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পায়ো। লিখেছেন, ‘‘জেনারেল সোলেমানি আর নেই জেনে রাস্তায় আনন্দ-নৃত্য করছেন ইরাকের মানুষ।’’