নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ১৬ ডিসেম্বর৷৷ টানা ৭ ঘন্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো অগ্ণিদগ্দ গৃহবধূ৷ পারিবারিক কলহের জেরে অভিমানে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন এক গৃহবধূ৷ আগুনের লেলিহান শিখায় শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো৷ প্রথমে গ্রামীন হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা চললেও অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসক জি বিতে রেফার করলে জিবি যাওয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন কৃষ্ণা নমঃ (৩৮) নামের গৃহবধূ৷
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, উত্তরের কদমতলা থানাধীন পূর্ব লালছড়া গ্রামের ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অজিত নমঃ ও তার স্ত্রী কৃষ্ণা নমঃর সাথে কিছু বছর যাবত পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত৷ আর পারিবারিক কলহ দিনকে দিন বৃদ্ধি হতে থাকে৷ প্রতিদিনের মত গতকাল সকালবেলাও স্বামী অজিত নমঃ রঙের কাজে যাবার আগে স্ত্রী কৃষ্ণা নমের সাথে প্রচন্ড ঝগড়া ঝাটি করে কাজে চলে যান৷ দুপুর নাগাদ দুই ছেলে কৃষি জমিতে কাজে চলে যায়৷
সেই সুযোগে স্ত্রী কৃষ্ণা নমঃ অভিমানে নিজ বাড়ির পরিত্যক্ত একটি ঘরের দরজা বন্ধ করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন৷ আগুন লাগার পর কৃষ্ণার চিৎকার-চেচামেচি শুনে তার আত্মীয় পরিজনরা ছুটে এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পান কৃষ্ণা নমঃর সমস্ত শরীরে আগুন৷ কোনভাবে শরীরে আগুন নিভিয়ে আত্মীয় পরিজনরা কদমতলা থানা ও প্রেমতলা দমকল দপ্তরে খবর দেন৷
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কদমতলা থানার পুলিশ ও দমকল কর্মীরা৷ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অগ্ণিদগ্দ কৃষ্ণাকে কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কৃষ্ণার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করেন৷
ধর্মনগর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা কৃষ্ণা নমের শরীর ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়াতে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে জি বি হাসপাতালে রেফার করেন৷ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষ্ণার আত্মীয়-স্বজনরা গতকাল সন্ধ্যা বেলা অগ্ণিদগ্দ কৃষ্ণাকে জিবি নিয়ে যাওয়ার পথে কুমারঘাট এলাকায় রাস্তাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন৷ তারপর সেখান থেকে কৃষ্ণার মৃতদেহটি ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ আজ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷
কদমতলা থানার পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে৷ কি কারণে মাঝবয়সী এক গৃহবধূর গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ শুধু কি স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহ, নাকি অন্য কোন রহস্য রয়েছে তা পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসবে৷ গায়ে কেরোসিন ঢেলে যে আগুন লেগেছে তা স্পষ্ট পুলিশি তদন্তে৷