রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে স্থানীয় মানুষের চাহিদা অনুযায়ী শিল্প গড়ে তুলতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ ডিসেম্বর ৷৷ হাপানিয়ায় আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো মৎস্য মেলা৷ মৎস্যমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজস্বমন্ত্রী এনসি দেববর্মা, বিধায়িকা মিমি মজুমদার প্রমুখ৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন৷ মৎস্যমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে স্থানীয় মানুষের চাহিদা অনুযায়ী শিল্প গড়ে তুলতে হবে৷ তিনি বলেন, রাজ্যে সবচেয়ে বেশি মৎস্য উৎপাদন হয় জনজাতি এলাকায়৷

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, রাজ্যে মাছের ঘাটতি রয়েছে ২৪ হাজার ১৮১ মেট্রিকটনের৷ ঘাটতি মেটাতে মাছ আসে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে৷ মাছ আমদানি করতে প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে৷ স্থানীয়ভাবে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব হলে টাকার সাশ্রয় হবে৷ তাতে রাজ্যের উন্নতি হবে৷ মৎস্য চাষীদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ইচ্ছে করলে তিনবছরের মধ্যে মৎস্য উৎপাদনে রাজ্যকে স্বয়ম্ভর করা সম্ভব বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ মৎস্য চাষীরাও রাজ্যের উন্নয়নের মাপকাঠি বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মৎস্য চাষে মৎস্যচাষীদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনবছরের মধ্যে রাজ্যকে মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভর করার জন্য মৎস্যচাষীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কো-অপারেটিভ তৈরি করে নাবার্ড থেকে ঋণ নিয়ে মৎস্য চাষে সাফল্য মিলতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ রুদ্রসাগর, শুকসাগর, তাকমাজলা, সীমনা জলায় স্থানীয় জনগণকে নিয়ে মৎস্য চাষ করে সাফল্য মিলবে বলেও মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী৷


ধানচাষে যেখানে ১০ কোটি টাকা আয় হবে মৎস্য চাষে সেই জায়গায় ১০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ত্রিপুরা সরকারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এস কে রাকেশ, ইম্ফল শহরের কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের আচার্য তথা সরকারের যোজনা পর্ষদের সদস্য ড. সে আয়াপ্পান, আগরতলার মৎস্য কলেজের ডিন ড. পি কে পান্ডে, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা ডি কে চাকমা প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা রাজ্যে মাছ চাষের ক্ষেত্রে যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন তাদের সম্মাননা দেওয়া হয়৷ ত্রিপুরা সরকারের মৎস্য দপ্তর ও হায়দ্রাবাদের ন্যাশনাল ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ মেলায় ত্রিপুরা সরকারের মৎস্য দপ্তর, প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর, ফিসারি কলেজ সহ বেসরকারি বিভিন্ন মৎস্য চাষি এবং মাছের জন্য তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবারের স্টল রয়েছে৷ এতে বিভিন্ন স্টলে জীবন্ত মাছ ও মাছের তৈরি বিভিন্ন কাবার সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *