নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর৷৷ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা-৫-এর মধ্যে অবস্থান ত্রিপুরার৷ তাই বিপর্যয় মোকাবিলায় সকলকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে৷ আজ শুক্রবার এ-কথা বলেছেন ত্রিপুরা সরকারের ভূমি ও রাজস্ব দফতরের মন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা৷ অরুন্ধতীনগরে অবস্থিত মনোরঞ্জন দেববর্মা স্মৃতি পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে ৫৭-তম নিখিল ভারত অসামরিক প্রতিরক্ষা এবং গৃহরক্ষী বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবস-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষ্যে যৌথ বাহিনীর প্যারেড ও মহড়া অনুষ্ঠিত হয়৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি ও রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা৷ অনুষ্ঠানে তিনি এভাবেই সকলকে সতর্ক করেছেন৷
অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্যারেডে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, গৃহরক্ষী বাহিনী, অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং চারটি ব্যান্ড বাহিনী অংশগ্রহণ করেছে৷ অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি তথা ভূমি ও রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এই বাহিনীগুলি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে গড়ে তোলা হয়েছিল৷ পরবর্তী সময়ে সুচারু পরিচালনার মাধ্যমে এই বাহিনীগুলিকে জাতীয় ক্ষেত্রে আরও সুসংহত ও পরিশীলিত করা হয়েছে৷ গৃহরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা দেশমাতৃকার সুরক্ষায় ও উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং ত্রিপুরা রাজ্যে সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছেন৷
তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্বের আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে৷ বিভিন্ন জায়গা প্রাকৃতিক দুযর্োগের কবলে পড়ছে৷ আমাদের দেশও এ-থেকে ভিন্ন নয়৷ প্রায়শই আমাদের দেশকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুযর্োগের সুম্মুখীন হতে হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর গুরুত্ব অসীম৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্য ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা-৫-এর মধ্যে রয়েছে৷ যে-কোনও সময় বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে৷ সেদিক দিয়ে বিচার করে রাজ্য সরকার বিপর্যয় মোকাবিলার পরিকাঠামো গ্রামীণস্তর পর্যন্ত নিয়ে গেছে৷ বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম বণ্টন করা হচ্ছে৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহানির্দেশক রাজীব সিং বলেন, গৃহরক্ষী বাহিনী ও অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল যথাক্রমে প্রশাসনকে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা করা এবং প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলার জন্য৷ এই দুই বাহিনীর মূলমন্ত্র হচ্ছে নিষ্কাম সেবা৷
অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে আইজিপি (ক্রাইম) পুণীত রস্তোগী, আইজিপি (ট্রেনিং অ্যান্ড হোমগার্ড) উত্তমকুমার মজুমদার, অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের অধিকর্তা একে ভট্টাচার্য-সহ পুলিশ বাহিনীর পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷
অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী দলগুলির মধ্যে প্রথম হয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ১ নম্বর হোমগার্ড বাহিনী৷ এছাড়া অনুষ্ঠানে রাজ্যে অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর বেসিক কোর্স ট্রেনিং-এ সর্বশ্রেষ্ঠ সফলতার জন্য একতা দেবকে শংসাপত্র প্রদান করা হয়েছে৷ এদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ভূমি ও রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা৷
অনুষ্ঠানে এই দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে যৌথ বাহিনীর প্রতি রাজ্যপাল রমেশ বৈস ও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠ করা হয়েছে৷ অনুষ্ঠান শেষে রাজ্য অসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কিত মহড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে৷