নয়াদিল্লি, ৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে চিঠি লিখে দোষীদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করার অনুরোধ করলেন নির্ভয়ার বাবা-মা। তাঁরা জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ড এড়াতে দোষী মরিয়া প্রচেষ্টা করছে। প্রাণভিক্ষার আবেদন গৃহীত হলে বিচারব্যবস্থার ওপর থেকেই বিশ্বাস ও ভরসা উঠে যাবে। তাঁরা আরও জানান, ঘটনার জেরে অসহনীয় মানসিক আঘাত, বেদনা ও ষন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। বিচারের প্রতিক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে চলেছে।
নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ৪ অপরাধী বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি। ২০১৭ সালে বিনয়ের মৃত্যুদণ্ড লাঘবের আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর একে একে দিল্লি সরকার ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন জানায় অন্যতম ফাঁসির আসামি বিনয় শর্মা। আগেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের নেতৃত্বাধীন দিল্লি সরকারও বিনয়ের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করেছে। হায়দরাবাদে এক পশু চিকিত্সকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের আবহের মধ্যেই দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডের ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামির প্রাণভিক্ষার আরজির খবর সামনে আসে । যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আবেদনের ফাইল খারিজ করে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে | ফাঁসি রুখতে এখন একমাত্র পথ হল রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হওয়া।
তবে রাষ্ট্রপতির দোষীদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করার অনুরোধ করেলেন নির্ভয়ার বাবা-মা। নির্ভয়ার মা আশাদেবী বলেন, বিচারের আশায় গত সাত বছর ধরে আমি প্রত্যেক দুয়ারে ঘুরে বেরাচ্ছি। আমি দেশের বিচারব্যবস্থা এবং সরকারের কাছে আবেদন রাখতে চাইছি, নির্ভয়ার ভয়াবহ পরিণতি যারা করেছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে চলন্ত বাসের ভিতরে ২৩ বছর বয়সী প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যা করে ছয় দুষ্কৃতী। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে ফাঁসির আদেশ জারি করে আদালত। এক দুষ্কৃতী নাবালক হওয়ার কারণে ২ মাস জুভেনাইল হোমে বন্দি থাকার পরে মুক্তি পায়। বাকি পাঁচ জনের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত রাম সিং জেলের ভিতরে আত্মহত্যা করে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে গণধর্ষণ ও হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া মুকেশ, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা ও অক্ষয় কুমার সিংয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ওই চার জনের তরফে ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আবেদন গত মে মাসে নাকচ করে শীর্ষ আদালত। ফাঁসি রুখতে এখন তাদের একমাত্র পথ হল রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হওয়া।