নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ অক্টোবর৷৷ রাজ্যে সড়ক ও সেতুর মেরামতি এবং নির্মাণকাজ দ্রততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পূর্ত দপ্তরের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আজ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বৈঠকে পৌরহিত্য করেন৷ দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম তিনি পর্যালোচনা করেন৷ সড়ক ও সেতুর মেরামতি ও নির্মাণকাজ দ্রততার সাথে রূপায়ণ করার জন্য দপ্তরকে বিশেষ নজর দিতে বলেন তিনি৷ এক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র চিহিণত করে কাজ করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, যে রাস্তাগুলি হাসপাতাল, বাজার, জেলা, মহকুমা ও ব্লক সদর এবং অন্যান্য জনবহুল স্থানকে যুক্ত করে রেখেছে, সেগুলির কাজে অগ্রাধিকার দিতে হবে৷ কোনওভাবেই যেন এই অগ্রাধিকারের কাজগুলি আটকে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ তিনি বলেন, কাজে গতি বাড়াতে হবে৷ দ্রত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ সমস্যা থাকলে চিহিণত করতে হবে৷ তা নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলে সমাধান করে কাজ করতে হবে৷ তবেই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যাবে৷
এদিনের সভায় পূর্ত দপ্তরের প্রধান সচিব এস আর কুমার উপস্থিত ছিলেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন৷ সভায় পূর্ত দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার দীপক দাস সার্কেল অনুসারে দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্মের তথ্য তুলে ধরেন৷ তিনি জানান, পূর্ত দপ্তরের ৫টি সার্কেলের অন্তর্গত ৩,৯৭৫টি রাস্তা রয়েছে৷
এর মধ্যে কুমারঘাট সার্কেলে ৭১৩টি, উদয়পুরে ১,০৯৭টি, আমবাসায় ২০১টি এবং আগরতলার দুটি সার্কেলে রয়েছে ১,৯৬৪টি৷ তিনি বলেন, দপ্তরের জনিয়র ইি’নীয়ারগণ নিয়মিতভাবে এই রাস্তাগুলি পরিদর্শন করছেন৷ পরিদর্শনের সময় তারা রাস্তাগুলির অবস্থা, মেরামতির প্রয়োজনীয়তা, কোথাও জরুরী ভিত্তিতে মেরামতির দরকার রয়েছে কিনা এই সকল বিষয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্টের মাধ্যমে দপ্তরকে অবহিত করেন৷ দপ্তর সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে৷ চলতি মাসে করা এরূপ একটি সার্ভের তথ্য তিনি সভায় উপস্থাপন করে মুখ্য বাস্তুকার শ্রীদাস জানান, দপ্তরের ৫টি সার্কেলের অন্তর্গত যে ৩,৯৭৫টি রাস্তা রয়েছে, তার মোট দূরত্ব ৮,১১০ কিমি৷ তার মধ্যে প্রায় ৪,৯৫৭ কিমি রাস্তা বর্তমানে ভালো অবস্থায় রয়েছে৷ মেরামতি দরকার ৩,১৫২ কিমি রাস্তার৷ চলতি বছরে ৯১৯ কিমি রাস্তার মেরামতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান৷ এছাড়াও চলতি বছরের বিভিন্ন কাজের অগ্রগতি বিষয়ক একটি পরিসংখ্যান সম্পর্কে সভাকে অবহিত করা হয়৷ এই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২.৭৯ কিমি৷ এর মধ্যে ৬০.২১ শতাংশ অর্থাৎ ১.৬৮ কিমি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে৷ তাছাড়াও ১২৫টি কালভার্ট নির্মাণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিলো৷ এ পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে ৪৪টি৷ শতাংশের হিসাবে ৩৫.২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷
নতুন রাস্তা ফরমেশনের ক্ষেত্রে ৬৩.৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ জি এস বি অর্থাৎ গ্র্যানিউলার সাব বেইস স্তর পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৫৪ শতাংশ৷ কার্পেটিং-এর কাজও দ্রততার সাথেই সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে মুখ্য বাস্তুকার শ্রীদাস জানান৷ চলতি বছরে ২৯টি আর সি সি সেতু নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ তার মধ্যে চারটি সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ বাকিগুলির কাজও দ্রততার সাথেই সম্পন্ন করা হচ্ছে৷ ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই সবগুলি সেতুর কাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে তিনি জানান৷ এছাড়াও এদিন দপ্তরের প্রধান প্রধান সাতটি রাস্তার কাজের অগ্রগতি নিয়েও সভায় আলোচনা করা হয়৷ অমরপুর থেকে ছবিমুড়া, গণ্ডাছড়া-রইস্যাবাড়ি রাস্তা থেকে নারিকেল কুঞ্জ, বিলোনীয়ার কাসারী ট্রাইজংশন থেকে গৌরাঙ্গ বাজার, জোলাইবাড়ি থেকে আইলমারা, শান্তিরবাজার থেকে অমরপুরের কাসকো, গণ্ডাছড়া থেকে রইস্যাবাড়ি, মনু থেকে কাঞ্চনপুর এই সাতটি রাস্তার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সভায় আলোকপাত করা হয়৷ এদিনের সভায় পূর্ত দপ্তরের সুপারিন্টেন্ডিং ও এক্সিকিউটিভ স্তরের ইঞ্জিনিয়ারগণ উপস্থিত ছিলেন৷