BRAKING NEWS

স্ত্রী হত্যার অভিযোগে ধৃত স্বামীকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠাল আদালত

নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ১২ অক্টোবর৷৷ স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে ধৃত স্বামীকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত৷ গতকাল সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় থানাধীন রঘুনাথপুর এলাকায় তরুণী গৃহবধূ পারমিতা ভট্টাচার্যকে খুনের অভিযোগে পুলিশ তাঁর স্বামী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকে গ্রেপ্তার করেছিল৷ তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি ৪৯৮এ, ৩০৪বি এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে৷ আজ তাকে পুলিশ বিশালগড় এসডিজেএম আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছিল৷ আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেছে৷ এদিকে, ওই গৃহবধূর শ্বশুর বিনয় ভট্টাচার্য এবং শ্বাশুড়ি সবিতা ভট্টাচার্য পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে৷

প্রসঙ্গত, বিয়ের ঠিক তিন বছরের মাথায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন এক তরুণী গৃহবধূ৷ শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ মৃতার নাম পারমিতা ভট্টাচার্য৷ তাঁর বয়স ২৩ বছর৷ তাঁর বাবা সুভাষ ভট্টাচার্য পেশায় পুলিশ কর্মী৷ পরিবারের কনিষ্ঠা কন্যা ছিলেন পারমিতা৷ তার বাপের বাড়ি বিশালগড় থানার অন্তর্গত জাঙ্গালিয়া এলাকায়৷

গত তিনবছর আগে বিশালগড় রঘুনাথপুর এলাকার বিনয় ভট্টাচার্যের ছেলে বিশ্বজিত ভট্টাচার্যের সঙ্গে সামাজিক রীতি মেনে হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে হয়েছিল পারমিতার৷ বিয়ের একবছর সুখেই কেটেছে তাদের দাম্পত্য জীবন৷ এরপর পারমিতার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার৷ স্বামী বিশ্বজিত ভট্টাচার্য পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী৷ অভিযোগ ইদানিং পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি৷

মৃতার বাবা সুভাষ ভট্টাচার্য বলেন, প্রতিদিন আকণ্ঠ মদ্যপান করে রাতে তার মেয়েকে মারধরের পাশাপাশি অমানবিক নির্যাতন করতেন বিশ্বজিৎ৷ তার দাবি, বিয়ের সময় মেয়ের শ্বশুর বাড়ির হাতে তুলে দিয়েছিলেন নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার সহ ছয় লক্ষ টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী৷ তারপরও বিভিন্ন সময়ে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য পারমিতাকে চাপ দিত বিশ্বজিত, অভিযোগ করেন তিনি৷ কোন সময় অক্ষমতা দেখালে পারমিতার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরও তীব্র হত, ক্ষোভের সুরে বলেন তিনি৷ তার কথায়, এভাবেই কেটেছে তার মেয়ের জীবনের শেষ দুটি বছর৷ কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাতটি ছিল পারমিতার জীবনের শেষ রাত৷ স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে নৃশংসভাবে খুন হল সে, কান্নায় ভেঙে পরে বলেন তিনি৷

সুভাষবাবু অভিযোগ করেন, শ্বাসরুদ্ধ করে মারার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পারমিতাকে৷ রাত সাড়ে এগারটায় ঘটেছে ঘটনা৷ খবর পেয়ে বাড়ির সকলে ছুটে যান হাসপাতালে৷ গিয়ে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে ট্রলিতে৷ কান্নায় ভেঙে পড়েন সবাই৷ খবর পেয়ে বিশালগড় হাসপাতালে ছুটে আসে পুলিশ৷ হাসপাতাল থেকেই স্বামী বিশ্বজিতকে আটক করে নিয়ে যায় বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ৷ শুক্রবার সকালে মৃতার বাবা সুভাষ ভট্টাচার্য, স্বামী বিশ্বজিত ভট্টাচার্য এবং শাশুড়ি সবিতা ভট্টাচার্যের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন৷ অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন পারমিতার বাপের বাড়ির লোকজন সহ জাঙ্গালিয়া এলাকাবাসী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *