BRAKING NEWS

রাজ্যের ১২টি পিছিয়ে পড়া ব্লকের উন্নয়নে পরিকল্পনা নিল সরকার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ সেপ্ঢেম্বর ৷৷ দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজী ২০১৪ সালে দেশের শাসনভার গ্রহণ করার পর দেশের ১১৭টি জেলাকে পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে চিহ্ণিত করেছিলেন৷ এরমধ্যে আমাদের রাজ্যের ধলাই জেলাও রয়েছে৷ সেই জেলাগুলিকে ‘ট্রান্সফরমেশন অব অ্যাসপিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রামের’ মাধ্যমে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সেই বিষয়েও উদ্যোগে ‘ট্রান্সফরমেশন অব অ্যাসপিরেশনাল ব্লক প্রোগ্রাম (টি এ বি পি)’ শীর্ষক একদিবসীয় কর্মশালার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথাগুলি বলেন৷


উদ্বোধকের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের পিছিয়ে পড়া ধলাই জেলার উন্নয়নের পাশাপাশি ১২টি পিছিয়ে পড়া ব্লকের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার৷ ব্লকগুলি হলো ধলাই জেলার ছামনু, মঙ্গিয়াকামী, তুলাশিখর, উত্তর ত্রিপুরা জেলার দামছড়া, দশদা এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার রূপাইছড়ি ব্লক৷ ব্লকগুলির উন্নয়ন করতে যেসব ক্ষেত্রের উপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে অর্থ ব্যয় করা হবে তা হলো স্বাস্থ্য ও পুষ্ঠি ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, শিক্ষাক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, জীবিকা ও দক্ষতার উন্নয়নের ১৫ শতাংশ এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ৷ ব্লকগুলির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যে সমস্ত উন্নয়নমূলক প্রকল্প রয়েছে তা ইতিমধ্যেই রূপায়ণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে৷

আগমী ৩ বছরের মধ্যে এই ব্লকগুলিকে উন্নতিশীল ব্লকে রূপান্তর করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ রাজ্য সরকারের গ্রামোন্নয়ন দপ্তর বিভিন্ন সহযোগী দপ্তরের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ব্লকগুলিকে উন্নয়ন করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গরীব, কৃষক ও জনজাতিদের জন্য শুধু মায়াকান্না করলেই চলে না, কাজ করেও দেখাতে হয়৷ দেশে আগেও অনেক প্রধানমন্ত্রী গ্রাম, গরীব ও কৃষকমুখী ব্যবস্থার কথা বলেছেন৷ কিন্তু বাস্তবে গ্রাম, গরীব ও কৃষমুখী ব্যবস্থা করছেন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি দেশের কৃষকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান বিধি যোজনার মাধ্যমে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি বছরে ৬ হাজার টাকা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন৷ এই প্রকল্পে রাজ্যের ২ লক্ষ ১৫ হাজার কৃষকের অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যেই ৮৮ কোটি টাকা পৌঁছে গেছে৷ গ্রামোন্নয়ন, সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস, সবকা সাথ সবকা বিকাশ এই শ্লোগানগুলির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীজি সীমাবদ্ধ থকেননি৷ সেইসব শ্লোগানকে বাস্তবায়নেও তিনি পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছেন৷


মুখ্যমন্ত্রী নর্থ-ইস্ট কাউন্সিল বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গ তুলে ধরে জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিখ্যাত পর্যটন ক্ষেত্রগুলি আরও উন্নত ও আকর্ষণীয় করে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরার পরিকল্পনাও নর্থ-ইস্ট কাউন্সিলের বৈঠকে নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে ২০২২ সালের মধ্যে নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে এই প্রথম কৃষকদের কাছ থেকে নূ্যনতম সহায়কমূল্যে ধান ক্রয় করা হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনা হয়েছে৷ তাতে কৃষকদের কাছে মোট ৪৮ কোটি টাকা পৌঁছে গেছে৷ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্পদ যোজনার মাধ্যমে রাজের ৭টি পরিবারকে রাইস মিল, মশলা ফ্যাক্টরি, আচার ফ্যাক্টরি ইত্যাদির জন্য ভর্তুকিতে ব্যাঙ্ক থেকে ২৮ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার যে ১২টি পিছিয়ে পড়া ব্লককে চিহ্ণিত করেছে সেগুলিকে উন্নয়ন করার লক্ষ্যে জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, বিডিও-দের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদেরও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে৷

তাতেই নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজটি সম্পন্ন করা যাবে৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব সৌম্যা গুপ্তা বলেন, ‘ট্রান্সফরমেশন অব অ্যাসপিরেশনাল ব্লক প্রোগ্রামের’ মাধ্যমে রাজ্যের ৫টি জেলা ১২টি ব্লককে পিছিয়েপড়া ব্লক হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে৷
ব্লকগুলির অধিকাংশই জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার অন্তর্গত৷ চিহ্ণিত এই ১২টি ব্লকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্প রয়েছ তা রূপায়ণের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তিন বছরের মধ্যে ব্লকগুলির উন্নয়নে ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে৷ প্রতিটি ব্লকের কাজের অগ্রগতি তদারকির জন্য বিশেষ সচিব বা তার উপরের পদমর্যাদা সম্পন্ন আধিকারিককে স্টেট প্রভারী অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ অনুষ্ঠান এছাড়াও ভাষণ দেন মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলু এবং গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ সিং৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দপ্তরের প্রধান সচিব শশীরঞ্জন কুমার, কৃষি ও কৃষক দপ্তরের সচিব মানিক লাল দে, সএবাস্থ্য দপ্তরে সচিব দেবাশিস বসু, বজ্ঞান প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের সচিব শৈলেন্দ্র সিং, মৎস্য দপ্তরের সচিব রামেশ্বর দেব, রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব বরুণ কুমার সাহু এবং মুখ্য বন সংরক্ষক অমিত শুক্লা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *