নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ভুল শুধরে না দিলে ত্রিপুরার উন্নয়ন করা সম্ভব নয়৷ তাই, সমালোচনা করুন, তবে তা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে হোক, সেটাই কাম্য৷ মঙ্গলবার আগরতলা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের কর্মশালার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে এ-কথা বলেন ত্রিপুরার শিক্ষা ও আইন দফতরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ তাঁর সাফ কথা, ভুল করলে গণতান্ত্রিক চাবুক মেরে শুধরে দেবেন৷

প্রসঙ্গত, আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী মিডিয়া ওয়ার্কশপ কাম ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম আজ শেষ হয়েছে৷ তথ্য ও সংসৃকতি দফতরের উদ্যোগে এবং আগরতলা প্রেস ক্লাবের সহযোগিতায় ১৫ থেকে ১৭ সেপ্ঢেম্বর পর্যন্ত এই ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ আজ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷
প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ৷ আইনসভা, কার্যনির্বাহী (সাধারণ প্রশাসন) ও বিচার বিভাগ, এই তিন স্তম্ভের দুর্বলতা সৃষ্টি হলে চতুর্থ স্তম্ভ তা দূর করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে৷ তাঁর মতে, শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা কোনও পেশা নয়, এটা একটা আদর্শ বা সমাজসেবা৷ তিনি সাংবাদিকদের সেই আদর্শকে দিশা হিসেবে গ্রহণ করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করার পরামর্শ দেন৷
তাঁর কথায়, এই তিনদিনের কর্মশালায় সাংবাদিকতা বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে৷ এখান থেকে সাংবাদিকরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন ৷ এই শিক্ষা তাঁদের সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারবে ৷ তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হল ত্রিপুরাকে এক ত্রিপুরা ও শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে তোলা ৷ এই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সাংবাদিকদের তিনি সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান ৷ সরকার ভুল পথে পরিচালিত হলে সংবাদ মাধ্যমকে সেই ভুল ধরিয়ে দিতেও তিনি আহ্বান জানান৷ তাঁর সাফ কথা, গণতান্ত্রিক চাবুক দিয়ে মেরে শুধরে দেবেন৷ পরবর্তী সময়ে এ-ধরনের কর্মশালা আগরতলা ছাড়া বিভিন্ন জেলাতেও করার জন্য তিনি তথ্য ও সংসৃকতি দফতর এবং প্রেস ক্লাবকে পরামর্শ দেন৷
অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ত্রিপুরা সংবাদপত্র সোসাইটির সম্পাদক অরুণ নাথ৷ তিনি বলেন, সাংবাদিকতা এমন একটা পেশা যা অন্য সব পেশা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা৷ যার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকরা সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেন৷ তিনি সাংবাদিকদের সূত্র নির্ভর না হওয়ার পরামর্শ দেন৷ সূত্র নির্ভর হয়ে পড়লে সংবাদ লেখার ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানা গড়ে ওঠে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷
অনুষ্ঠানে কলকাতা থেকে আগত বিশিষ্ট সাংবাদিক মউপিয়া নন্দী বলেন, শুধু নির্দিষ্ট কয়দিনের কর্মশালায় নয়, সাংবাদিকদের প্রতিটি মুহূর্তে সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে৷ তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক যত বেশি মানুষের সাথে মিশবেন ততই তাঁর দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে৷ আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সরকার তাঁর বক্তব্যে এ-ধরনের কর্মশালা প্রতিবছর করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ এ-ধরনের কর্মশালা রাজ্যের নতুন সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন তথ্য ও সংসৃকতি দফতরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস৷ ধন্যবাদসূচক বক্তব্য পেশ করেন তথ্য ও সংসৃকতি দফতরের উপ-অধিকর্তা ভাস্কর দাশগুপ্ত৷ সমাপ্তি সংগীত পরিবেশন করেন তথ্য ও সংসৃকতি দফতরের শিল্পীগণ৷ তিনদিনের কর্মশালায় রাজ্যের ৫০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেছিলেন৷ শেষ দিনে অতিথিগণ তাঁদের হাতে শংসাপত্রও তুলে দেন৷

