বাম জমানায় দখলে নেওয়া ওয়াকফ সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবে জোট সরকার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ সেপ্ঢেম্বর৷৷ বাম জমানায় সরকার দখলে নেওয়া ওয়াকফ সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার৷ সারা রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ডের ২০২৪টি সম্পত্তি রয়েছে৷ তার মধ্যে ৭৭১টি সম্পত্তি পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার দখল নিয়েছিল৷ পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সম্পূর্ণ বেআইনী এই কাজের সংশোধনের লক্ষ্যে ওই সম্পত্তিগুলি পুণরায় ওয়াকফ বোর্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান সরকার৷


সংখ্যালঘু কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এমন কোন ক্ষেত্র বাদ যায়নি, যেখানে অনিয়ম হয়নি৷ তাঁর দাবি, সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে পূর্বতন সরকার ওয়াকফ সম্পত্তি দখল নিয়েছিল৷ সরকারী অফিস সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য ওয়াকফ বোর্ডের ২০২৪টি সম্পত্তির মধ্যে ৭৭১টি সম্পত্তি বামফ্রন্ট সরকার দখল নিয়েছিল৷ তাঁর কথায়, আইন অনুযায়ী ওয়াকফ সম্পত্তি কোনভাবেই খাস করা যায় না৷ ওই সম্পত্তি সংখ্যালঘু অংশের জনগণের ব্যবহার ছাড়া অন্য কোন কাজে লাগানো যায় না৷ তা মুসলীম অধিকারের পরিপন্থী৷


তিনি জানান, ইন্দ্রনগরের মসজিদ, রামনগর, সোনামুড়া, দূর্গাপুরে মসজিদ, রামনগরে কবরস্থান এমন ৭৭১টি সম্পত্তি পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার দখল নিয়েছিল৷ তাঁর কথায়, দখল নেওয়া সম্পত্তিগুলি মূলত মসজিদ, ঈদগাহ এবং কবরস্থান৷ সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী এদিন কটাক্ষ করে বলেন, মুসলীমদের জন্য শুধু ময়াকান্না করে গেছে বামফ্রন্ট সরকার৷ তাঁদের উন্নয়নে কোন কাজ করেনি৷


এদিকে, মাদ্রাসায় আধুনিক শিক্ষা পৌছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার৷ সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বলেন, সারা রাজ্যে ১২৯টি মাদ্রাসায় ৩৫৯ জন শিক্ষক এবং ৫৩৭২ ছাত্র রয়েছেন৷ তেমনি, ৫১টি সরকার অনুদানপ্রাপ্ত মাদ্রাসায় ১৩৯ জন শিক্ষক এবং ৪৭৫৫ ছাত্র রয়েছেন৷ তিনি জানান, মাদ্রাসায় ধর্মীয় পড়াশুনার পাশাপাশি এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করা হবে৷ তাতে, তাঁরা আধুনিক শিক্ষারও সুযোগ নিতে পারবে৷ তিনি জানান, ওই মাদ্রাসাগুলিতে কম্পিউটার এবং অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি প্রদান করা হবে৷ সাথে যোগ করেন, এনসিইআরটি পাঠ্যপুস্তকও দেওয়া হবে তাঁদের৷


এদিন তিনি আরও জানান, সংখ্যালঘু অংশের ছেলেমেয়েরা অনেকেই মাদ্রাসার বদলে সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়াশুনায় আগ্রহী৷ এক সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী বলেন, রাজ্যে মাদ্রাসায় নবম ও দশম শ্রেণীতে ছাত্র রয়েছেন ৩২৬ জন৷ অথচ, সাধারণ বিদ্যালয়ে নবম ও দশম শ্রেণীতে সংখ্যালঘু অংশের ছাত্র সংখ্যা ১১,৪২৫ জন৷ একইভাবে, মাদ্রাসায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে রয়েছে ৫৭ জন ছাত্র৷ সেই তুলনায় সাধারণ বিদ্যালয়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে সংখ্যালঘু অংশের ছাত্র সংখ্যা ৩৭৩৫ জন৷ এদিন তিনি আরো জানান, মাদ্রাসায় স্নাতকোত্তর শিক্ষকরা ২৭,২৫৫ টাকা, স্নাতক শিক্ষকরা ২১,১৫৩ টাকা এবং অস্নাতক শিক্ষকরা ১৭,০৩৮ টাকা প্রতি মাসে পাচ্ছেন৷ সূত্রের খবর, মাদ্রাসার শিক্ষকদের রাজ্যের অন্যত্র ডেপুটেশনে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার৷