নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জুন ৷৷ অগ্ণিদগ্দ হয়ে অকালে প্রাণ গেল এক গৃহবধূর৷ ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে উত্তর ত্রিপুরার কুমারঘাট এলাকায়৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে স্বামীর বাড়ি থেকে সাফাই গাওয়া হলেও অনেকে এর পিছনে পারিবারিক অশান্তির জেরে পরিকল্পিত খুন বলে মনে করছেন৷

প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, প্রায় ছয় বছর আগে কুমারঘাটের বাসিন্দা গোপাল দাসের ছেলে কিশোর দাস ভালোবেসে বিয়ে করেন পাগলাছড়ার নির্মল দে-র কন্যা লিপিকা দে-কে৷ অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই লিপিকার স্বামী এবং শাশুড়ি মিলে লিপিকার উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন৷ দীর্ঘদিন ধরে এই নির্যাতন চলতে থাকে৷ এ নিয়ে বেশ কয়েকবার গ্রামীণ সালিশি সভাও হয়েছে৷ কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷ দিনের পর দিন গৃহবধূ লিপিকার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে৷ এরই মধ্যে গত সন্ধ্যায় শ্বশুর বাড়িতে গৃহবধূর চিৎকারে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন৷ তাঁরা দেখেন, লিপিকার শরীরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে৷ প্রতেবেশীরা আগুন নিভিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূকে কুমারঘাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক লিপিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷
এ-বিষয়ে কুমারঘাট হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মার্গারেট দেববর্মা জানান, মৃতার শরীরে কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া গেছে৷ হাসপাতালে পৌঁছনোর অনেক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে৷ এদিকে মেয়ের মৃত্যুর লিপিকার বাবা শ্বশুর বাড়ির লোকদের দায়ী করেছেন৷ নিহত লিপিকার বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়ের শাশুড়ির প্ররোচনা এবং মদতে লিপিকার স্বামী ধারাবাহিকভাবে বউয়ের উপর নির্যাতন চলাত৷
এদিকে মৃতার স্বামী জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না৷ কীভাবে ঘটনাটি ঘটল এ-ব্যাপারে বিন্দুবিসর্গ জানেন না তিনি৷ ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসে কুমারঘাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী৷ তারা সন্দেহের বশে লিপিকার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে যান৷ কুমারঘাট থানার ওসি প্রদ্যুৎ দত্ত জানান, ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে৷ লিপিকা কী আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাঁর শরীরে আগুন লাগিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে৷