BRAKING NEWS

শিশির অধিকারীর সমর্থনে পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়ার নির্বাচনী জনসভা থেকে মোদীকে আক্রমণ মমতার

কাঁথি, ২৮ এপ্রিল (হি. স.) : বৈশাখী দুপুরে পারদ চড়ে ৪২ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হেঁড়িয়াতে তৃণমূলের মঞ্চে মাইক্রোফোন হাতে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, \”ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল ভারত গড়তে ৪২-এ ৪২টা আসন এনে দিন। মোদী সরকারের ভাঁওতা মানুষ ধরে ফেলেছে।\” সেই সঙ্গে মোদী সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।


রবিবার কাঁথি লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারীর সমর্থনে পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়াতে নির্বাচনী জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, \”পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শহীদদের জেলা। এই জেলায় মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি সরকারি কলেজ, কোলাঘাটে পলিটেকনিক কলেজ তৈরি করা হয়েছে। নন্দীগ্রাম, চণ্ডীপুরে দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পানীয়জল প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই জেলায় ১৪টি কর্মতীর্থ করা হয়েছে। দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়ক করা হয়েছে। কেলেঘাই, কপালেশ্বরী, বাবুই এ ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভার হয়েছে। এই জেলায় উন্নয়নের কিছু বাকি নেই। দিঘা নতুন রূপে সেজেছে।হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষৎ ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে নতুন রূপে সেজে উঠেছে। এই জেলা শিক্ষায় অনেক এগিয়ে রয়েছে।\”

হেঁড়িয়ার জনসভা থেকে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, \”বিজেপির কাছে আজকে সিপিএম পতাকাটাকে বিক্রি করে দিয়েছে। নন্দীগ্রামে যা হয়েছিল তা আমি ভুলে যাইনি। আজও নন্দীগ্রামে ১৬ জন মানুষ ফিরে আসেনি। আমরা খেজুরি, এগরা, পটাশপুর, হেঁড়িয়াতে ঢুকতে পারিনি। নন্দীগ্রামে সিপিএম আমাদের ঢুকতে দেয়নি। বহুবার আমাদের আটকানো হয়েছে। নন্দীগ্রামে সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সিপিএমের হার্মাদ এখন বিজেপির জল্লাদ। তারা এক হাতে তলোয়ার, গদা নিয়ে সন্ত্রাস করছে। বাংলায় মোদী এসে বলছে এখানে নাকি দূর্গা পুজো হয় না। তাই বলছি মিথ্যাবাদীর দল। বিজেপির এক-একটা সভায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। বিজেপির সবেতে দিল্লি, মুম্বই থেকে এজেন্সি নিয়ে এসে কাজে লাগানো হচ্ছে। এত টাকার উৎস কোথায়? সবার ব্যাঙ্ক একাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা কি জমা হয়েছে? নোটবন্দি করে দেশে দুরবস্থা এনেছে বিজেপি। আমরা হিন্দু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। বাংলায় নরেন্দ্র মোদী ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার ফেলার চেষ্টা করছে। নির্লজ্জ একটি রাজনৈতিক দল। নরেন্দ্র মোদী উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছে। বারাণসীতে মিটিং করে বিজেপি কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয় না। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাজ বেশি। এটা বাংলার নির্বাচন নয়, এটা দিল্লির নির্বাচন। তাই নরেন্দ্র মোদীকে একটিও ভোট দেবেন না। দিল্লিতে একটা চ্যানেলকেও ওনার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেওয়া হয় না। আগামীদিনে বাংলাই শেষ কথা বলবে। কয়েকটা আরএসএস-এর লোক বলছে আমরা হিন্দু রাষ্ট্র চাই। ধর্ম-ধর্ম-সমন্বয়। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। মনে রাখবেন এটা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। বিজেপি আগে জন্মেছে না, মা দুর্গা আগে জন্মেছে? তাই ধর্ম আমাকে শেখাচ্ছে! চাকরি, খাওয়ার, বাসস্থান দেবেন না, খালি মানুষকে ধর্মে ধর্মে ভাগ করবে। পাঁচ বছর আগে বলল আমি চা-ওয়ালা। পাঁচ বছর পরে বলছে আমি চৌকিদার। ইয়ে চৌকিদার কেয়া হ্যায়? চৌকিদার চোর হ্যায়। তাই এই চৌকিদারকে বিদায় দিতে হবে।\”
মমতা জানান, \”রাজ্যসরকারের ন’শো কোটি টাকা দিয়ে শস্যবিমা করে দিয়েছি। কৃষকবন্ধু, স্বাস্থ্যসাথী করে দিয়েছি। আমরা রাজ্যে আয়ুষ্মান করতে দেব না। আগেও তো অনেক সরকার ছিল, কেউ কিছু করেছে। আমরা বাংলায় মোদীবাবুকে গোল্লা দেব। আগে দিল্লি সামলা, তারপর সামলাবি বাংলা। কাঁথি, মালদাতে তৃণমূল কর্মীরা খুন হয়েছে। বাংলায় বেশি বাড়াবাড়ি কোরো না। দিল্লিতে বিজেপিকে বোল্ড আউট করবই। \”তুমি আমাকে ৪২ এ ৪২ দাও, আমি তোমাদের ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল ভারত দেব। এদের ‘কন্যাশ্রী’ দেওয়ার টাকা নেই। কিন্তু দিল্লিতে ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্টি অফিস করার টাকা আছে। ভোটপ্রচারে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে বিজ্ঞাপনে।\”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *