BRAKING NEWS

অসমে বিদেশি ধর্মীয় সংগঠনগুলির ধর্মান্তর প্রক্রিয়া, গভীর উদ্বেগ স্থানীয় আধ্যাত্মিক নেতৃবর্গের

গুয়াহাটি, ৮ এপ্রিল (হি.স.) : অসমের বিভিন্ন জেলায় বিদেশি ধর্মীয় সংগঠনগুলি দ্রুত ও ব্যাপকভাবে স্থানীয় (খিলঞ্জিয়া) জনগোষ্ঠীয় মানুষজনকে ধর্মান্তিরত করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজ্যের আধ্যাত্মিক সংগঠনগুলি। গুয়াহাটির বিবেকানন্দ কেন্দ্রে রবিবার লোকজাগরণ মঞ্চের আহ্বানে অনুষ্ঠিত স্থানীয় আধ্যাত্মিক সংগঠনগুলির এক প্রতিনিধি সম্মেলনে বিদেশি ধর্মীয় সংগঠনগুলি কর্তৃক অসমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীয় লোকজনকে ধর্মান্তরণ প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সম্মেলনে কয়েকটি প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে।

লোকজাগরণ মঞ্চের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলেন, বর্তমান সময়ে অসমের স্থানীয় ধর্মাশ্রিত সংস্কৃতির প্রতি বিদেশি ধর্মীয় সংগঠনগুলি প্রবল হুমকির সৃষ্টি করেছে। এই হুমকিকে প্রতিহত করার জন্য রাজ্যের সমস্ত স্থানীয় আধ্যাত্মিক সংগঠনগুলি সম্মিলিতভাবে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি তৈরি করে তা বাস্তবায়িত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।আধ্যাত্মিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা আরেকটি প্রস্তাবে বিদেশি ধর্মীয় সংগঠনগুলির দ্বারা দ্রুতগতিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শুরু করা ধর্মান্তরণ প্রক্রিয়াকে অসাংবিধনিক বলে আখ্যা দেন এবং এই প্রক্রিয়াকে রোধ করার জন্য ফলপ্রসূ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সম্মেলনে স্থানীয় আধ্যাত্মিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা অসমের জনবিন্যাসের অস্বাভাবিক পরিবর্তন এবং তার ফলে সংঘটিত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থবিরোধী কাজকর্ম নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে অসমের বহু সত্র, মঠ-মন্দির, অভয়ারণ্য এবং সরকারি ভূমি পূর্ববঙ্গীয় মূলের মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরা ব্যাপক হারে বেদখল করে রাজ্যের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও প্রতিনিধিরা অভিমত ব্যক্ত করেন। তাঁরা সর্বস্তরের ভূমি থেকে বেদখলকারীদের উচ্ছেদ করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য সরকারের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানান। সম্মেলনে আরেকটি প্রস্তাবে রাজ্যের আধ্যাত্মিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা সুপ্রাচীন ভারতীয় আধ্যাত্মিক তথা সাংস্কৃতিক পরম্পরাকে যথাযোগ্য সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম একটি সুস্থির এবং শক্তিশালী সরকার কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঐকমত্য প্রকাশ করেন। প্রতিনিধিরা ভারতীয় সামাজিক পরম্পরার পরিপন্থী দল অথবা ব্যক্তিদের আসন্ন নির্বাচনে প্রত্যাখ্যান করার জন্যও সমগ্র রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।লোকজাগরণ মঞ্চ, অসম-এর দ্বারা রবিবার আয়োজিত এই সম্মেলনে অসমের স্থানীয় যে-সব আধ্যাত্মিক সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বরদোয়া শ্রীনরোয়া সত্রের সত্রাধিকার দেবানন্দ দেবগোস্বামী, ব্রহ্মধর্ম সমাজের আচার্য চরণ নার্জারি, গুয়াহাটি পঞ্চকন্যা ধামের আচার্য বাবা ভৃগুগিরি মহারাজ, বরপেটা সত্রের বুড়া সত্রীয়া বশিষ্ঠ দেবশর্মা, বদতি চাঙিনী সত্রের সত্রাধিকার যোগেন্দ্র লাগাছু, দেবালয় সংঘ, অসম-এর সভাপতি সুরেশ ভট্ট, রামরায় কুঠি সত্র/অসম সত্রের সত্রাধিকার/সভাপতি জিতেন্দ্রনাথ প্রধানী, বীরবল সত্রের সত্রাধিকার রাজেশ্বর মহাপাত্র, উত্তর কমলাবাড়ি সত্রের সত্রাধিকার জনার্দ্দন দেবগোস্বামী, দামোদর দেব সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি উমাকান্ত শর্মা, বাঘরগঞা সত্রের সত্রাধিকার হিরুপ্রসাদ মহন্ত, তিওয়া রাজা, আমচৈ-র শহরি রাজা সুরেন্দ্রনাথ কোঁওর, দীনজয় সত্রের ডেকা সত্রাধিকার মুকুন্দানন্দ গোস্বামী, কমলাবাড়ি সত্রের বুড়া ভকত সোনারাম শর্মা, শ্রীমন্ত শঙ্করদেব যুব সমাজের সভাপতি রিজু পাঠক, লক্ষ্মীরাম সংঘ, কারবি আংলং-এর মার্গদর্শক বলরাম ফাংচু, আধ্যাত্মিক যুব সম্মেলন, অসম-এর কার্যাধ্যক্ষ শ্রীমন রাজগুরু, শুয়ালকুচির শ্রীহাটী সত্রের ডেকা সত্রাধিকার রাজীবলোচন সন্ত, নেপালি সমাজের ধর্মগুরু পুরুষোত্তম উপাধ্যায়, একশরণ ভাগবতী সমাজের অধ্যক্ষ প্রতাপচন্দ্র মেধি এবং শ্রীনরোয়া বাসুদেব থানের ডেকা সত্রাধিকার দেবেন্দ্র দেবগোস্বামী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *