BRAKING NEWS

পদস্থ পুলিশদের বদলি নিয়ে কমিশনকে প্রতিবাদ চিঠি মমতার

কলকাতা, ৬ এপ্রিল (হি.স.): সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের আগে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে| শুধু কলকাতা ও বিধাননগরের নগরপাল নয় আরও দুই জায়গার পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার রাতের দিকে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে কমিশন | রাজ্যের পদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের নির্বাচন কমিশনের বদলির নির্দেশে লিখিত প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার মুখ্যমন্ত্রী একটি চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের বদলির নির্দেশে জানান | এদিন চিঠির শুরুতে সৌজন্য বোধ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “শুরুতে আমি ভারতের সর্বোচ্চ নির্বাচন কমিশনকে আমার সর্বোচ্চ সম্মান জানাই। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি যে ইসিআই ভারতে গণতন্ত্র সংরক্ষণের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে | ” এরপরেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ওই চিঠিতে লেখা হয়, “খুব দুঃখের সাথে আমাকে এই চিঠি লিখতে হচ্ছে| আজ চারজন অভিজ্ঞ অফিসারকে তাদের বর্তমান অবস্থান থেকে বদলি করল ভারতের নির্বাচন কমিশন । এর বিরুদ্ধে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি | ”একই সাথে তিনি লেখেন, “ কমিশনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত খামখেয়ালী, উদ্দেশ্যমূলক এবং পক্ষপাতমূলক” | এরপর বিজেপির নাম উল্লেখ করে তিনি যোগ করেন, “আমাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না যে, কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের নির্দেশে নেওয়া হয়েছে । কয়েক দিন আগে, বিজেপি নেতারা প্রেসের কাছে বলেছিল যে, রাজ্যে পুলিশ প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তা শীঘ্রই ইসিআই দ্বারা নিয়োগ করা হবে”| ওই চিঠিতে আরও লেখা হয়, “গতকালই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি প্রার্থী একটি টিভি শোতে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন যে, আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি বাংলায় খারাপ এবং এ কারণে সাত দফা নির্বাচনের আদেশ দেওয়া হয়েছে।এরপরই কমিশনের আদেশে পুলিশের ওই কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়।এর ফলেই কমিশনের কাজের প্রতি সংশয় তৈরী হয় যে তাঁরা আদৌ নিজেদের আইন মেনে কাজ করছে নাকি বিজেপির কথা মত চলছে”|

চিঠির পরবর্তী অংশে তিনি বলেন , “কলকাতা, বিধানানগরে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করে। যাদের আজ বদলি করা হল সেইসব কর্মকর্তারা এলাকার অবৈধ মুদ্রা, স্বর্ণ, মদ এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ কারবারীদের দক্ষতার সাথে পরাস্ত করেছে এবং গ্রেফতার করেছে। এই কর্মকর্তাদের অপসারণ ইসিআইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন তুলে দেয় যে, এই পদক্ষেপটি স্বার্থপর দল এবং তাদের রাজনৈতিক কর্তাদের প্রতি ঢাল হয়ে দাড়াচ্ছে কিনা”|এরপর মমতা অভিযোগ করে লেখেন, “ যে দুজন পর্যবেক্ষকের নাম কমিশন ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার সম্বন্ধে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে কি কমিশন দায়িত্ব নেবে? আইন এবং আদেশ একটি রাজ্যের বিষয়। তবুও রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হয়নি। কর্মকর্তাদের নাম প্যানেলের খোঁজার নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। এই পদক্ষেপে রাজ্য সরকারকে এমন একটি অফিসারদের প্যানেল পাঠানো উচিত যারা সংশ্লিষ্ট এলাকাটি সম্পুর্ন চেনে|” সবশেষে তিনি লেখেন , “তাই আমি কমিশনকে তার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং কমিশনের নির্দেশে কীভাবে এবং কার নির্দেশনার অধীনে কর্মকর্তাদের স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি”।

মুখ্যমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে থাকা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সরকারিভাবে এদিন দুপুরে এই চিঠি প্রকাশ করলেও প্রশ্ন উঠেছে কেন মুখ্যমন্ত্রী তাঁরা সরকারি প্যাড ব্যবহার করলেন না| এই বিষয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর অবশ্য নিরুত্তরই থেকেছে|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *